ক্যামেরুনের ফুটবলার কেভিন সোনি (২৪)। খেলেন তুরস্কের শীর্ষস্থানীয় ক্লাব হাতায়স্পোরের আক্রমণভাগে। সম্প্রতি তুরস্ক ও সিরিয়ায় ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ভূমিকম্পের দিন তিনি তুরস্কে অবস্থান করছিলেন। তবে সৌভাগ্যবশত আল্লাহ তাকে এই দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করেন। কিন্তু কিভাবে তিনি নিরাপদ রইলেন, সে প্রসঙ্গে কেভিন সোনি বলেন, ‘বেঁচে যাওয়ার মূল কারণ হলো– তখন আমি ফজরের নামাজের অপেক্ষা করছিলাম।’
শুক্রবার আলজাজিরা মুবাশির ক্যামেরুনীয় ফুটবলারের সাক্ষাৎকারের ওপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সাক্ষাৎকারটি বৃহস্পতিবার ফুট মারকাতো নামের একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়। সেখানেই কেভিন সোনি একথা বলেন।
এ সময় তিনি আরো বলেন, ‘রোববার বিকেলে আমাদের কাশিমপাশা ক্লাবের বিপক্ষে ম্যাচ ছিল। ওই ম্যাচে আমাদের ক্লাব হাতায়স্পোর জয়লাভ করে। ম্যাচ শেষে আমি বাসায় ফিরে আসি।’
কেভিন সোনি বলেন, ‘পরদিন সোমবার (স্থানীয় সময়) ভোর ৫টা পর্যন্ত বাসায় পরিবারের সাথেই ছিলাম। হঠাৎ জমিনে কম্পন শুরু হলো। ওই সময় আমি পরিবারের সদস্যদের স্থির থাকতে বলি।’
‘কিন্তু যখন দেখলাম দেয়াল ও ছাদ ধসে পড়া শুরু হয়েছে, তখন সিঁড়ির দিকে দৌড়ে যাই। এ সময় মোবাইল ও পাসপোর্ট ছাড়া আর কিছু সাথে নেয়ার সময় ছিল না।’ জানান কেভিন।
তিনি বলেন, ‘আকস্মিক ওই পরিস্থিতিতে ১৭ তলা ভবনটির সপ্তম তলা থেকে লাফ দিব ভেবেছিলাম। তখন নিজেকে বললাম– যদি আমি এখান থেকে লাফ দিই, তাহলে পা ভেঙ্গে ফেলব, আর কোনো দিনই ফুটবল খেলতে পারব না। এজন্য সিদ্ধান্ত বদল করে সিঁড়ির দিকে দৌড়াই এবং বের হতে সক্ষম হই।’
কেভিন সোনির মতে– ‘তার সাথে যা ঘটেছে, তা সত্যিই অলৌকিক ঘটনা।’ তিনি বলেন, ‘আমি একজন সচেতন মুসলিম। (এই বিপদ থেকে) আমাকে রক্ষা করেছে নামাজের অপেক্ষা। (স্থানীয় সময়) ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে ফজর নামাজ আদায়ের অপেক্ষা করছিলাম আমি।’
‘আমরা যথেষ্ট ভাগ্যবান যে ভবনটি গুড়িয়ে যাওয়ার আগেই আমরা তা থেকে বের হতে পেরেছিলাম। দিনটি এমন ছিল, যা সবকিছু ওলটপালট করে দিয়েছে। আমি আমার আশপাশে অনেক মানুষকে প্রাণ হারাতে দেখেছি। আমি সত্যিই বিস্মিত!’ বলেই যাচ্ছিলেন কেভিন সোনি।
-আলজাজিরা মুবাশির অবলম্বনে বেলায়েত হুসাইনের অনুবাদ