রাজশাহী সীমান্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে দুই বাংলাদেশিকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বিরুদ্ধে। এসময় স্থানীয় বাংলাদেশিদের প্রতিরোধের মুখে নিজেদের দুটি অস্ত্র ফেলে পালিয়ে যায় বিএসএফ জওয়ানরা। গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে জেলার গোদাগাড়ীর খরচাকা সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।
গতকাল বিকেলে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে অস্ত্র দুটি বিএসএফকে ফেরত দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ঘটনার পর থেকে খরচাকা সীমান্তে টহল জোরদার করেছে বিজিবি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কাল গোদাগাড়ীর মোল্লাপাড়া ও খরচাকাসহ আশপাশের গ্রামের রাখালেরা পদ্মা নদীর চরে বাংলাদেশের সীমানার ভেতরেই নির্মল চরে মহিষ চরাতে যান। এসময় বিএসএফের দুই সদস্য বাংলাদেশি রাখালদের মহিষ চরাতে বাধা দেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। একপর্যায়ে বিএসএফ জওয়ানরা তেড়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে বাংলাদেশি নাগরিকদের বেধড়ক পেটাতে থাকেন।
ঘটনাটি দেখতে পেয়ে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে তাদের ওপরও হামলে পড়ে বিএসএফ। এসময় আত্মরক্ষায় বিএসএফ সদস্যদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন বাংলাদেশি নাগরিকরা। একপর্যায়ে বিএসএফ জওয়ানরা অস্ত্র ফেলে পালিয়ে যান।
বিএসএফের হামলায় বাংলাদেশি দুই নাগরিক আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন গোদাগাড়ীর দেওপাড়া ইউনিয়নের নিমতলা গ্রামের মোখলেসুর রহমানের ছেলে ফিরোজ (৩০) ও বিয়ানাবোনা গ্রামের ইউনুসের ছেলে বাবু (৩২)।
দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘বিএসএফ সদস্যরা বাংলাদেশের ভূ-খণ্ডে অনুপ্রবেশ করে দুই রাখালকে রাইফেল দিয়ে পিটিয়েছে। ঘটনাটি দেখে অন্যরা দৌড়ে গেলে তাদেরকেও পেটানো চেষ্টা করেন তারা। তবে বাংলাদেশিদের সম্মিলিত প্রতিরোধে মুখে রাইফেল ফেলেই পালিয়েছেন বিএসএফ জওয়ানরা।’
বিজিবির রাজশাহী-১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাব্বির আহমেদ আমাদের সময়কে বলেন, ‘বিএসএফ জওয়ানরা গতকাল বাংলাদেশের সীমানার ভেতরে ঢুকে পড়েছিলেন। এসময় স্থানীয় রাখালদের প্রতিরোধের মুখে তারা অস্ত্র ফেলে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে গোদাগাড়ীর খরচাকা সীমান্ত ফাঁড়ির বিজিবি সদস্যরা চরে গিয়ে রাখালদের কাছ থেকে অস্ত্র দুটি উদ্ধার করে।’
লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাব্বির আহমেদ বলেন, পরে ওইদিনই বিকেলে বিজিবি-বিএসএফের ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়। এ বৈঠকের মাধ্যমে বিএসএফের অস্ত্র দুটি ফেরত দেওয়া হয়েছে। তবে বাংলাদেশের সীমানার ভেতরে ঢুকে রাখালদের সঙ্গে হাঙ্গামা করার বিষয়ে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।