বাংলাদেশীদের ভিসা ভোগান্তিতে বিচলিত দিল্লি

0

visaবাংলাদেশে ভারতীয় ভিসার আবেদনকারীদের ‘ই-টোকেন’ সংগ্রহ করতে যে অপরিসীম ভোগান্তি ও অর্থদন্ড হচ্ছে, সেই সমস্যা সম্পর্কে তারা অবহিত বলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ জানিয়েছে।

ই-টোকেন পদ্ধতি নিয়ে ঢাকায় যে বিপুল অসন্তোষ তৈরি হয়েছে, দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে তা যথেষ্ট বিচলিত করেছে।

বিবিসি জানতে পেরেছে, গত ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলার সঙ্গে দিল্লির কর্মকর্তাদের এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

এই পদ্ধতিকে সহজ ও দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য যে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে সে ব্যাপারে তারা একমত হয়েছেন।

বিবিসি-র এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ স্বীকার করেছেন, এই পদ্ধতিকে আরও স্বচ্ছ ও সুসংহত করে তোলা প্রয়োজন।

তবে সেই সঙ্গেই তিনি দাবি করেছেন বাংলাদেশে তাদের লোকবলের তুলনায় ভিসাপ্রার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি বলেই এই ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।

ই-টোকেন সংগ্রহে সমস্যার ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিবিসি বাংলা যখন ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল, তখন লিখিত বক্তব্যে তারা জানায় দালাল বা প্রতারকরা ই-টোকেনের নামে টাকা দাবি করলে সেটা পুলিশকে জানানো উচিত।

তাদের বক্তব্যে এটা স্পষ্ট ছিল যে এ ব্যাপারে তাদের কোনও দায় আছে বলে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ আদৌ মনে করছে না।

কিন্তু মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যেই সেই অবস্থান পাল্টে নিয়ে দিল্লিতে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানাল, ভিসার জন্য ই-টোকেন সংগ্রহের পদ্ধতিতে যে ত্রুটি আছে সে সম্পর্কে তারা অবহিত।

ই-টোকেনের রমরমা ব্যবসা
ই-টোকেনের রমরমা ব্যবসা

তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মি. স্বরূপ জানান, ঢাকায় হাইকমিশন সম্ভবত সারা পৃথিবীতে ভারতের সব দূতাবাসের মধ্যে সব চেয়ে বেশি সংখ্যক ভিসা দিয়ে থাকে।

“কিন্তু তার পরেও সেখানে ভিসার চাহিদা আমাদের ক্ষমতার চারগুণ বেশি। ফলে আমরা প্রতিনিয়ত সেখানে আমাদের ভিসা আবেদনের পদ্ধতিকে আরও উন্নত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, সেখানে আরও লোকবল নিয়োগ করে এই বাড়তি চাহিদাকে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছি।“

কিন্তু বাংলাদেশে গণ-ইমেইল কর্মসূচির মাধ্যমে যে ভিসাপ্রার্থীরা ক্যাম্পেইন চালাচ্ছেন তারা তো বলছেন ই-টোকেন সংগ্রহ করতে গিয়ে মোটা অঙ্কের ঘুষেরও লেনদেন করতে হচ্ছে? না-হলে কীভাবে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় গজিয়ে উঠছে এই ই-টোকেন পাইয়ে দেওয়ার দোকান? এর জবাবেও বিকাশ স্বরূপ বলছেন, ভিসা দেওয়ার ক্ষমতার চেয়ে চাহিদা বেশি বলেই কিন্তু এই ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।

“আমরা এই সব সমস্যা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবহিত এবং ভিসা আবেদনের পদ্ধতিটা যাতে সম্পূর্ণ সুসংহত, স্বচ্ছ্ব ও কার্যকরী করে তোলা যায় তার জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।“

হয়রানি ও অর্থদেন্ডর বিরুদ্ধে বাংলাদেশে যারা গণ ই-মেইল কর্মসূচিতে সামিল হয়েছিলেন, মনে হচ্ছে তাদের প্রতিবাদে কিছুটা হলেও কাজ হচ্ছে, অন্তত ভারত এ ব্যাপারে নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More