হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের যে উদ্বেগ রয়েছে, তা নিরসনে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপে সন্তুষ্টি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে সফররত দেশটির অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অ্যালান বার্সিন গতকাল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় সাক্ষাৎকালে এ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। এ সময় মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ড. সারাহ সিয়লসহ প্রতিনিধি দলের অন্যান্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে সারাহ সিয়ল বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন এবং জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কমিউনিটি পুলিশিং এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ইমামদের সাহায্যে জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগসমূহ খুবই চমৎকার বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, গত ১৫ জানুয়ারি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আয়োজিত কাউন্টারিং ভায়োলেন্ট এক্সট্রিমিজম শীর্ষক বৈঠকে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন প্ল্যান অব অ্যাকশন টু ভায়োলেন্ট এক্সট্রিমজম উপস্থাপন করেন। নারীর ক্ষমতায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় ভূমিকার কথা উল্লেখ করে সারা সিয়ল উক্ত প্ল্যান অব অ্যাকশন বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন। এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেহেতু জাতিসংঘের সকল কার্যক্রমেই বাংলাদেশের সমর্থন থাকে, তাই এক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় হবে না।
বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও রাজনীতিতে বিরোধী দলের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মার্কিন প্রতিনিধি দলকে জানান, ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলসহ সকল রাজনৈতিক দল স্থানীয় নির্বাচনসমূহে অংশগ্রহণ করছে এবং অত্যন্ত অংশগ্রহণমূলক পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তিনি জানান, ৩০টির বেশি টিভি চ্যানেল, এক হাজারের বেশি পত্রপত্রিকা বাংলাদেশে যেভাবে মত প্রকাশ করে তা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিশেষ করে তরুণ সম্প্রদায় তাদের যে সংগঠিত মতামত তুলে ধরে- তাও সরকার নজরে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তবে বৃহত্তর শান্তিশৃঙ্খলার স্বার্থে এর অপব্যবহারও সরকারের নজরে রয়েছে।
বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার ও শক্তিশালী উল্লেখ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, চলমান প্রক্রিয়ার অধীনে ইতোমধ্যে ৪র্থ পার্টনারশিপ ডায়ালগ, ৪র্থ নিরাপত্তা ডায়ালগ ও ৪র্থ মিলিটারি টু মিলিটারি ডায়ালগ এবং দ্বিতীয় টিক্ফা ডায়ালগ অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং ভবিষ্যতে অন্যান্য ক্ষেত্রেও দু’দেশ একসঙ্গে কাজ করতে পারে। সন্ত্রাসবাদ দমনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্যায়ে বাংলাদেশ সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ দমনে কাজ করছে।