শতকরা ৬৫ জন শিশুর বিয়ে হয় ১৬ বছরের নীচে

0

Ten Age[ads1]বাংলাদেশে শিশুবিয়ে অপরাধ হওয়া সত্তে¡ও এখনও পর্যন্ত যত শিশুর বিয়ে সম্পন হয় তার মধ্যে শতকরা ৬৫ জন শিশুর বিয়ে হয় ১৬ বছরের নীচে । শিশু বিয়ের মধ্যে মাত্র শতকরা ৫.৭৯ ভাগের বিয়ে হয় প্রেম করে, তবে বাবা মায়ের অনুমতিতে। আর মাত্র ১.৫ ভাগ শিশুর বিয়ে হয় বিয়ের আগে শারিরীক সম্পর্ক অথবা পালিয়ে যাওয়ার কারণে । তবে পালিয়ে যাওয়া ও বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপণের বেশ কিছু ঘটনা দেখা গেছে ১৬ বছর বয়সের বেশি মেয়েদের মধ্যে ।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ”মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন” আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য প্রকাশ করেন।

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের ২৪ টি জেলায় ” বিবাহযোগ্য বয়স ও শিশু বিয়ে”  নিয়ে যে গবেষণা চালিয়েছে, তাতে বাল্যবিয়ের বয়স ও কারণ নিয়ে গত একবছরের এই তথ্য উপাত্ত উঠে এসেছে । মূলত, শিশুবিয়ের ধরণ, বিয়ের বয়স নিয়ে অভিভাবকদের ধারণা এবং বিয়ের বয়স কমানোর ব্যাপারে যৌক্তিকতা অনুসন্ধানের জন্য এই গবেষণা চালানো হয়েছে ।[ads1]

যে বিশেষ পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে সরকার বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৪ এর খসড়ার ১৮ এর ৪ উপধারায় ” এই আইনের সাধারণ কার্যকারিতা ক্ষুন্ন না করিয়া বিশেষ পরিস্থিতিতে উভয়পক্ষের পিতামাতার সম্মতি এবং আদালতের অনুমোদনক্রমে অন্যূন ১৮ বৎসর বয়স্ক ছেলে ও অন্যূন ১৬ বৎসর বয়স্ক কন্যার সহিত বিবাহ অনুষ্ঠিত হইতে পারিবে ।” এই গবেষণা ফলাফলের মাধ্যমে সেই ’বিশেষ পরিস্থিতির’ পক্ষে কোন যৌক্তিকতা পাওয়া যায়নি । বরং আশংকাজনক ব্যাপার হচ্ছে গবেষিত এলাকার প্রায় সবাই মনে করে সরকার ইতোমধ্যেই বিয়ের বয়স ১৮ থেকে কমিয়ে ১৬ করে ফেলেছে ।

যদিও সরকার এই বিশেষ পরিস্থিতির কোন ব্যাখ্যা দেয়নি কিন্তু গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত বিভিন্ন সংবাদ এর ভিত্তিতে জানা গেছে, সরকার বিয়ের ন্যূনতম বয়স কমানোর যুক্তি হিসেবে মনেকরে মেয়েরা কম বয়সে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে এবং অনাকাংখিত দৈহিক মিলনের ফলে গর্ভধারণের ঘটনা ঘটতে পারে । এই আশংকা থেকেই সরকার বিয়ের বয়স কমানোর বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছে । অথচ গবেষণায় দেখা গেছে , মাত্র ১.৫ ভাগ শিশুর বিয়ে হয় বিয়ের আগে শারিরীক সম্পর্ক অথবা পালিয়ে যাওয়ার কারণে।[ads2]

এই অনুচ্ছেদটি নিয়ে বিভিন্ন মানবাধিকার, সামাজিক ও নারী সংগঠন ইতোমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা মনে করছে বাবা মা ও অভিভাবকরা ১৮ নং ধারার এই উপধারাটির অপব্যবহার করতে পারেন। এই উপধারাটি যোগ করা হলে বাবা মা অথবা অভিভাবকরা ১৫ বছরের আগেই তাদের কন্যা সন্তানকে বিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে এই উপধারাটি যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করবেন । কারণ গবেষণা এলাকার অধিকাংশ অভিভাবকই মনে করেন ১৪ থেকে ১৫ বছর মেয়েদের বিয়ে দেয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় ।

গবেষিত এলাকার তথ্য অনুযায়ী শিশুবিয়ের গড় বয়স ১৫.৫৩ । এমনকী ১০ বছর হওয়ার আগেও বিয়ে হচ্ছে কারো কারো । গবেষণার আওতাধীন এলাকার অধিকাংশ মানুষই মনে করে ১১ / ১২ বছর বয়সের আগে বিয়ে হলে তা হবে শিশুবিয়ে । খুব অল্পসংখ্যক মানুষই মনে করে ১৬ বছরের আগে বিয়ে হলে, তা শিশুবিয়ে হবে । শিশুবিয়ের প্রধান কারণ হিসেবে উঠে এসেছে মেয়েদের নিরাপত্তাহীনতা, দারিদ্রতা এবং সামাজিক রীতিনীতি (ভাল বর, যৌতুক, পুরুষের পছন্দ কমবয়সী মেয়ে)।

শিশুবিয়ের শিকার মেয়েদের মধ্যে শতকরা ৬৩.৭৪ ভাগ ছাত্রী, শতকরা ২৪ ভাগেরও বেশি ঘরের কাজ করে, আর ১১.৬৩ ভাগ আয়মূলক কাজে নিযুক্ত।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রেসিডেন্ট মানবাধিকার ও নারী নেত্রী আয়েশা খানম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড: শাহানাজ হুদা ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম ।[ads1]

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More