জাতীয় পার্টিকে নিয়ে বিব্রত সরকার

0

Japaজাতীয় পার্টির নেতৃত্ব নিয়ে সৃষ্ট মতবিরোধ দ্রুত নিরসনের লক্ষণ দেখছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি চিঠি চালাচালিতে বিব্রত সরকার। জাপার নেতাদের মধ্যে নেতৃত্বের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এরশাদ ও রওশনকে চায়ের আমন্ত্রণ জানাতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার মানবকণ্ঠকে এমন তথ্য জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির একাধিক শীর্ষ নেতা।
এদিকে এরশাদের এক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি মানবকণ্ঠকে বলেন, পার্টিতে কো-চেয়ারম্যান প্রতিষ্ঠা ও মহাসচিব পরিবর্তন পার্টির একান্তই নিজস্ব বিষয়। এ ব্যাপারে ক্ষমতাসীনরা নাক গলাতে চাচ্ছে না। কিন্তু সরকারের ছত্রছায়ায় বিরোধী দল হওয়াতে কিছুটা দায়িত্ব পড়ে ক্ষমতাসীনদের। এমন পরিস্থিতি সরকার কিছুটা বিব্রতবোধ করছেন। পার্টিতে লেগে থাকা সমস্যার সমাধান শিগগিরই কেটে না গেলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সরকারের একটি প্রতিনিধি দল জাপার নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠক করার কথা রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এরশাদের এই ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি আরো বলেন, গত কয়েক দিন আওয়ামী লীগের একাধিক মন্ত্রী ও শীর্ষ নেতারা স্যার এরশাদকে ফোন দিয়ে দলের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর জানতে চান তার কাছ থেকে। এরশাদ তাদের সঙ্গে খুব যত্মসহকারে কথা বলছেন। একইভাবে জাপার চেয়ারম্যান এরশাদও দলের অভ্যন্তরীণ নানা বিষয়ে আওয়ামী লীগের কয়েক মন্ত্রী ও শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে স্বেচ্ছায় যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। দলের এই পরিস্থিতিতে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে জাপা চেয়ারম্যান এই যোগাযোগ অব্যাহত রাখছেন।
অপরদিকে রওশনের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, জাপার নেতৃত্ব নিয়ে এরশাদ ও রওশনের মধ্যে পাল্টাপাল্টি চিঠি চালাচালির কারণ সহসাই সমাধানের লক্ষণ দেখছেন না জাপার কয়েক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এমপি। এ বিষয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের হস্তক্ষেপ কামনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি চিঠি দেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশনপন্থি নেতারা। এ সূত্রের দাবি এ চিঠি পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী যেকোনো সময় দলের চেয়ারম্যান এরশাদ ও তার স্ত্রী বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশনকে চায়ের আমন্ত্রণ জানাতে পারেন। চিঠিটি কবে পাঠানো হবে জানাতে চাওয়া হলে রওশনপন্থি এক এমপি বলেন, চিঠি পাঠানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমি এতটুকু শুনেছি, কবে পাঠাবে জানি না, তবে চিঠি পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী হয়ত এরশাদ ও রওশনকে একসঙ্গে বসে চায়ের আমন্ত্রণ জানাতে পারেন।
রওশনপন্থি হিসেবে বর্তমানে পরিচিতি পাওয়া ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জিয়া উদ্দিন বাবলু, তাজুল ইসলাম চৌধুরী, মসিউর রহমান রাঙা ও মুজিবুল হক চুন্নু আপাতত দলের কোনো বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো কথা বলছেন না। কারণ কি জানতে চাওয়া হলে রওশনপন্থি জাপার এক তরুণ এমপি বলেন, যেখানে রওশন প্রকাশ্যে চিঠি দিয়েছেন, সেখানে তাদের ভূমিকা মুখ্য বিষয় নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরশাদ ও রওশনকে চায়ের আমন্ত্রণ জানাতে পারেন এ বিষয়ে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বেগম রওশন এরশাদের রাজনৈতিক সচিব ফখরুল ইমামকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি মানবকণ্ঠকে বলেন, আমি কিছুই জানি না। অন্যদিকে জাপার একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, এ মুহূর্তে দলে একটি স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। তা না হলে মারাত্মক সংকটে পড়বে পার্টির কার্যক্রম। এজন্য প্রয়োজন জাপার শীর্ষ নেতা ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ ব্যক্তিদের নিয়ে পার্টির গ্রুপ বিলুপ্তি করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলকে সুসংগঠিত করা। এতে আগামী নির্বাচনে জাপা ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে। প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া চিঠির ব্যাপারে জাপার মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার গতকাল সন্ধ্যায় মানবকণ্ঠকে বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More