“বাংলাদেশে এখন এক রাজতন্ত্র কায়েম হয়েছে। আর রাজতন্ত্রের জন্য আছেন একজন লেডি হিটলার।” – এমন মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেছেন, “সেই লেডি হিটলার যা হুকুম দিচ্ছেন, নির্দেশ দিচ্ছেন তার সৈন্য-সামন্তরা যারা আছে, অর্থাৎ প্রশসন, তারা সেভাবে কাজ করছেন। সবকিছু তার কথা মতো চলে।”
দেশে এখন আইন-শৃঙ্খলার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ – এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ আজকে মোটেও ভালো নেই। মোটেও শান্তিতে নেই। প্রতিনিয়ত জুলুম অত্যাচার সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।”
লন্ডনের রিভারব্যাংক পার্ক হোটেল প্লাজায় আয়োজিত সিভিক মিটিংয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, এমপি হওয়ার যোগ্যতা নেই এমন অনেককে মন্ত্রী করা হয়েছে। বাংলাদেশে বেসামরিক প্রশাসনকে পুরোপুরি দলীয়করণ করে অনেক যোগ্য, মেধাবী কর্মকর্তাকে দায়িত্বের বাইরে রাখা হয়েছে।
বক্তব্যের শুরুর দিকেই যুক্তরাজ্যে অবস্থানের সুবাদে প্রত্যক্ষ করা সেখানকার আইন-শৃঙ্খলার উচ্চ প্রশংসা করেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
‘দেড় মাসে অনেক কিছু দেখেছি, খুব ভালো লেগেছে। তাদের যে আইনশৃঙ্খলা এবং সুন্দর যে সব আইন আছে সেগুলো আমার মনে হয়, অনেক ভালো জিনিস শেখার আছে।’
শুধু শেখার নয়, এসব আইন-কানুন বাংলাদেশে বাস্তবায়নের সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন খালেদা জিয়া।
চিকিৎসার জন্য রোজার ঈদের আগে লন্ডনে গিয়ে ছেলে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে আছেন তিনি।
দীর্ঘদিন পরিবার থেকে দূরে থাকার কথা নেতাকর্মীদের জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য এখানে এসেছি।’
তবে এখন দেশে ফিরতে চান জানিয়ে তিনি বলেন, “বহুদিন পর পরিবারের সঙ্গে দেখা এবং তারা ছাড়তে চায় না। আরও থাকতে বলে।
‘কিন্তু আপনারা প্রত্যেকে জানেন দেশের কী অবস্থা! আমার দেশে যাওয়া প্রয়োজন। সেজন্য আমাকে দেশে যেতে হবে।’
এর আগে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য, দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য যাদের কোন সৎ পরিকল্পনা থাকে না। যারা নিজেরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। মানুষের উপরে যাদের কোন আ¯’া থাকে না। তখন সেই দলটা, সেই সরকারটা বেছে নেয় সস্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ এবং জঙ্গিবাদ ও জুজুর ভয় দেখায়। কারন তাদেরকে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হলে এই সন্ত্রাসের উপর দিয়ে টিকে থাকতে হবে।
তারেক জিয়া আরো বলেন, বর্তমান সরকার যে সন্ত্রাসবাদের উপর টিকে আছে তার বড় প্রমাণ হলে বর্তমান বাংলাদেশের পরি¯ি’তি। জনগণ যাতে করে সরকারের উপর প্রতিবাদ করতে না পারে, মুখ খুলতে না পারে, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারে সেই জন্য বর্তমান সরকার এদেরকে ব্যাতি ব্যস্ত রাখার জন্য বিভিন্ন গল্প তৈরি করে, এইসব পরি¯ি’তি সৃষ্টি করে, এইসব হত্যাকা- ঘটিয়ে জনগণকে ভিত করে রেখে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ উত্থান করেছে।
নিউইর্য়ক টাইমসে প্রকাশিত হয়েছে, শেখ হাসিনা সেপ্টেম্বর মাসে নিউইর্য়ক সফরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশের সরকার বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে বিদেশি হত্যাকা-ের কথা জানিয়েছিল। কিš‘ দেখা যায়, শেখ হাসিনা সরকার ও তার নেতা মন্ত্রীরা তা আমলে না নিয়ে উল্টো তথ্যদাতাদের গালমন্দ করেছে।
সভায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান ছেলে তারেক রহমান ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী খালেদার পাশে মঞ্চে বসেন।
দর্শক সারিতে পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালকে দেখা গেছে।