সরকার দিন দিন ফেঁসে যাচ্ছে। কথা বার্তায় খেই হারিয়ে ফেলছে। বিএনপির জন্য ডিসিসির নির্বাচনের ফাঁদ পাততে গিয়ে এখন সেই ফাঁদে সরকার নিজেই ফেঁসে যাচ্ছে। সরকারের পরিকল্পনা ছিল ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন দিলে বিএনপির মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা সরকারের দালালেরা হরতাল ফেলে নির্বাচনে ছুটে যাবে, যেমন করে অতীতে গিয়েছিল। এই রকম একটি ভ্রান্ত ধারণা থেকে সরকার প্রধান খুবই অপ্রাসঙ্গিকভাবে কেবিনেট মিটিংয়ের পরে স্থানীয়ও সরকার মন্ত্রীকে সিটি করপোরেশনগুলোর নির্বাচনের কথা বলেন। মন্ত্রী যথারীতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করার জন্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে চটজলদি চিঠি দিয়ে দেন। এখন সরকারের ইচ্ছা অনুযায়ী অন্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা বা তাদের মতামত না নিয়ে নির্বাচন করতে গিয়ে ঝুঁকির মধ্যে পরে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। মরার উপরে খাঁড়ার ঘা হিসাবে দেখা দিয়েছে নিরাপত্তার বিষয়টি। এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন দিতে গেলে সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্ব শর্ত হল প্রার্থী ও ভোটারদের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিতও করা। এবং সেই সঙ্গে সব প্রাথীদের নিরবিঘ্নে প্রচার-প্রচারণা চালানোর সম-সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার করার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকার রাজপথে জনগণের ঢল নামবে। প্রথমে মনে হবে ভোটে অংশ গ্রহণ করার জন্য মানুষ খুশিতে রাস্তায় নেমে আসছে যে কারণে ওই মানুষের ঢলকে সরকার বাধা দিতে পারবে না। তখন যদি সরকার বাধাও দেয় তাহলে বাধাও বুমেরাং হয়ে দাঁড়াবে। জনগণ যদি একবার রাস্তায় নেমে আসে তাহলে সে জনগণকে ঠেকাতে কোন অস্ত্র এখনও পৃথিবীতে আবিষ্কার হয় নাই বলিয়াই অনেকে মনে করে। তবে বর্বরতার কোন সীমা নাই তাও আমাদের জানা আছে। বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। শত শহীদের রক্ত মাড়ায়ে বিএনপির পক্ষে সিটি কর্পোরেশানের নির্বাচনে যেতে পারে না এবং যাবে না বলেই আমার বিশ্বাস। তবে নির্বাচন তফশিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার যে মাহেন্দ্রক্ষণ সৃষ্টি হবে তার সুযোগ বিএনপি নিতে না পারলে ইতিহাস বিএনপিকে ক্ষমা করবে না। আমি পূর্বে ডিসিসির ঢাকা উত্তরের নির্বাচনে যাওয়ার খায়েশ করেছিলাম কিন্তু আন্দোলনের বৃহত্তর স্বার্থে সে খায়েশ আপাদত শিকায় তুলে রাখলাম। তবে সরকার মনে হয় দ্রুত তার সিদ্ধান্ত পূর্ণ বিবেচনা করবে যার জন্য বাহানা খুঁজছে !!!
লেখক: সাবেক সংসদ সদস্য