আগামী ১৭ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকায় জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনের ডাক দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
সোমবার চট্টগ্রামের আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসায় প্রায় সাড়ে ৪ মাস পর কেন্দ্রীয় কমিটির অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির আমীর আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। বৈঠকে হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটিতে রদবদল ও ঢাকা মহানগর কমিটি সম্প্রসারণ, চট্টগ্রাম মহানগর আহবায়ক কমিটি গঠনসহ নানা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব মাওলানা মুহিউদ্দিন রব্বানী।
তিনি জানান, বৈঠকে কারাবন্দি আলেম ও হেফাজত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করা হয়। এ দাবিতে এবং বিগত ২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত হেফাজত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে তার বরাবর চিঠি দেয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এছাড়া সারা দেশে জেলা পর্যায়ে কমিটি গঠনের মাধ্যমে হেফাজতকে সুসংগঠিত করতে মহাসচিবের নেতৃত্বে আরও একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আজকের বৈঠকে হাটহাজারী মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহইয়ার ছেলে জুনাইদ বিন ইয়াহইয়াকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটিতে নেওয়া হয়েছে। একই কমিটিতে প্রয়াত মহাসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদীর ছেলে রাশেদ বিন নূরকে দফতর সম্পাদক করা হয়েছে।
বৈঠকে সাংগঠনিক বিষয় ছাড়াও দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সেই সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের করণীয় নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয় বলে সভা সূত্র নিশ্চিত করে।
এসব বিষয়ে দেশবাসীকে অবহিত করতে সোমবার দুপুর ২টায় হেফাজতের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে কয়েক ঘণ্টা পর অজ্ঞাত কারণে সেই সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয়।
পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বৈঠকের বিষয়ে প্রচার সম্পাদক মুফতি কেফায়েতুল্লাহ আজহারী স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সভার কিছু সিদ্ধান্ত গণমাধ্যম কর্মীদের জানানো হয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- সিনিয়র নায়েবে আমীর আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া, মাওলানা সালাউদ্দিন নানুপুরী, মাওলানা আব্দুল আউয়াল, মুফতি জসিম উদ্দিন, মাওলানা ফুরকানুল্লাহ খলিল, মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেহপুরী, মাওলানা জহুরুল ইসলাম, মাওলানা মুহিউদ্দিন রব্বানী, মাওলানা মীর ইদরীস, মুফতি মোহাম্মদ আলী, মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সুবহানী, কিফায়েতুল্লাহ আজহারী, সাইয়েদ মাহফুজ খন্দকার ও মাওলানা রাশেদ বিন নূর।
বৈঠকে কেন্দ্রীয় কমিটি ও ঢাকা মহনগর কমিটি সম্প্রসারণ এবং পুনঃবিন্যাস করা হয়। কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী ও কেন্দ্রীয় দাওয়া সম্পাদক মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সোবহানীকে যুগ্মসচিব করা হয়।
এছাড়াও মুফতী কিফায়েতুল্লাহ আযহারীকে প্রচার সম্পাদক ও মাওলানা রাশেদ বিন নূরকে দফতর সম্পাদক করা হয়। অন্যদিকে মাওলানা তাজুল ইসলামকে আহবায়ক এবং মাওলানা লোকমান হাকিমকে সদস্য সচিব করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট চট্টগ্রাম মহানগর আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
বৈঠকে ব্যক্তি উদ্যোগে জাতীয় পর্যায়ের যেকোনো কাজে হেফাজতের পদ-পদবি ব্যবহার না করার জন্য হেফাজত আমীর সব দায়িত্বশীলদের সতর্ক করেন।
এছাড়া সারা দেশে জেলা কমিটি গঠন করার জন্য মহাসচিব সাজিদুর রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট সাব-কমিটি গঠন করা হয়। এতে আরও আছেন- মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী, মাওলানা মীর ইদরীস, মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সোবহানী ও মুফতী কিফায়েতুল্লাহ আজহারী।
কেন্দ্রীয় কমিটিতে যাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে- মুফতি আরশাদ রহমানী, মাওলানা আবদুল বাসির (সুনামগঞ্জ), মাওলানা শাহাদত হোসেন (রাঙ্গুনিয়া), মাওলানা খোবাইব, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, মাওলানা আবদুল কাদের (আমলাপাড়া), মাওলানা ইউনুস (রংপুর), মাওলানা শওকত হোসেন সরকার (নরসিংদী), মাওলানা সাঈদ নূর (মানিকগঞ্জ), মাওলানা আকরাম আলী (ফরিদপুর), মাওলানা হেলাল উদ্দিন (ফরিদপুর), ড. নুরুল আবসার আজহারী, মাওলানা তৈয়ব হালীম, মুফতি মাসুদুল করীম, মাওলানা নূরুর রহমান বেগ (বরিশাল), মাওলানা নিজামদ্দীন (নোয়াখালী), মাওলানা আবদুল মা’বুদ (বাগেরহাট), মাওলানা মুসলিম (কক্সবাজার), মাওলানা বোরহান উদ্দীন কাসেমী, মাওলানা আনওয়ার চকরীয়া, মাওলানা কেফায়েতউল্লাহ (টেকনাফ), মাওলানা ইয়াহহিয়া (নাজিরহাট), মাওলানা শাসমুল ইসলাম জিলানী, মাওলানা আব্দুল্লা (পোরশা), মাওলানা শরিফ (ঠাকুরগাঁও), মাওলানা তাফহিমুল হক (হবিগঞ্জ), মাওলানা জুনাইদ বিন ইয়াহিয়া এবং মাওলানা রাশেদ বিন নূর।
jugantor