চট্টগ্রাম কলেজের প্যারেড মাঠে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসি হওয়া জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর গায়েবানা জানাজা ঠেকানো ঘোষণা দিলেও জামায়াত-শিবিরের ধাওয়া খেয়ে পালিয়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এর আগে চকবাজার ও কলেজ এলাকায় ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা করে তারা।
দীর্ঘ দুই যুগ জামায়াত-শিবিরের দখলে থাকার পর গত বছরের শেষ দিকে নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনির নেতৃত্বে চট্টগ্রাম কলেজে প্রবেশ করে ছাত্রলীগ। কিন্তু সম্প্রতি হাটহাজারীতে ইউপি নির্বাচেন প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে দণ্ডিত কারাবন্দি রনির অনুপস্থিতিতে শিবিরের ধাওয়ায় পালাল ছাত্রলীগ।
বুধবার দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত দু’পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মাঝেই গায়েবানা জানাজা সম্পন্ন করে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে নিজামীর ফাঁসির পর প্যারেড মাঠে গায়েবানা জানাজার ঘোষণা দেয় জামায়াত। তবে এর বিরোধিতা করে বুধবার দুপর ১২টা থেকে নিজামীর গায়েবানা জানাজা ঠেকাতে নগরীর চকবাজার প্যারেড মাঠে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ কর্মীরা। অন্যদিকে জামায়াত-শিবিরও গায়েবানা জানাজার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ নিয়ে এলাকায় থমথমে অবস্থার সৃষ্টি হয়। এ সময় পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্যারেড মাঠের আশেপাশে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিজামীর গায়েবানা জানাজা ঠেকাতে প্যারেড মাঠের পূর্ব গেটে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ কর্মীরা।
অন্যদিকে চকবাজারের গোলজার মোড় ও আশপাশের এলাকায় জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়। এর মধ্যে দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম কলেজের পূর্ব গেট ও কেয়ারি কর্নারে বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় ছাত্রলীগ কর্মীরা।
পরে দুপুর দেড়টার দিকে জামায়াত-শিবিরের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী একত্রিত হয়ে ছাত্রলীগ কর্মীদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। এ সময় পুলিশও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের লাঠিপেটা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা শিবিরের ধাওয়ায় ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে চট্টগ্রাম কলেজের পূর্ব গেট ভেঙে প্যারেড মাঠে ঢুকে পড়ে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। পরে মাঠে জানাজা শেষ করে উত্তর দিক দিয়ে বেরিয়ে যায় তারা। এ সময় আবারো পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় শিবিরের কর্মীরা। এ সময় পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়লে কিছুক্ষণের মধ্যে শিবির কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
চকবাজার থানার ওসি আব্দুল আজিজ বাংলামেইলকে বলেন, ‘নিজামীর গায়েবানা জানাজাকে কেন্দ্র করে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা। জানাজা সম্পন্ন হয়েছে, এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’
সংঘর্ষ চলাচালে প্যারেড মাঠের আশেপাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দোকানপাট বন্ধ করে দেয় ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে প্যারেড মাঠ এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বাংলামেইল