রবিবার সকাল৷ ফেসবুকে লগ ইন করে প্রথমেই বদলালেন ভাবনার ঘর, এরপর বন্ধুদের খবর নিতে বৃত্তান্তে ঢু মারা৷ হঠাৎই নজরে পড়লো আপনার বন্ধু নয় এমন কারো বৃত্তান্তের ছবিসম্ভারে চিহ্নিত হয়ে আছে আপনার বান্ধবী!
যেইভাবা সেই কাজ৷ নজর বোলানো অচেনা ব্যক্তির বৃত্তান্তে আর খুঁজে বের করা কিভাবে সে চেনে আপনার বান্ধবীকে কিংবা আপনি এবং সেই ব্যক্তির মধ্যে কোনো পারস্পরিক বন্ধু আছে কিনা৷
… এভাবে সকালের বেশ খানিকটা সময় আপনার চলে যাচ্ছে ফেসবুকেই৷ আজকাল অবশ্য অনেক প্রতিষ্ঠানই চাকরি দেবার আগে পরখ করে নেয় ফেসবুক, টুইটার বা সামাজিক নেটওয়ার্কিং সম্পর্কে প্রার্থীর জ্ঞানের মাত্রা৷ আবার অনেকে চাকরি দেবার পর অনুরোধ করে ফেসবুক, টুইটারে সময় একটু কম ব্যয় করতে৷ এই দোটানার মধ্যেও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো কিন্তু ব্যস্ত সামাজিক নেটওয়ার্কিংকে জনপ্রিয় করতে৷
সে যাই হোক, বলছিলাম ফেসবুক আসক্তদের চাকরির কথা৷ সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে প্রসাধনী বিক্রি- প্রায় সব ধরণের প্রতিষ্ঠানই এখন চায় ইন্টারনেটে তাদের পণ্যের প্রসার বাড়াতে৷ আর বর্তমানে বিনা খরচায় মার্কেটিং এর জন্য সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইটগুলো হয়ে উঠেছে হটকেক৷
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সবার মস্তিষ্কে আবার সামাজিক নেটওয়ার্কিং এর সহজ সমীকরণ ঢুকতে চায় না৷ আর তাই, ডাক পড়ে ফেসবুক, টুইটার আসক্তদের!
আচ্ছা বলুনতো বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা কত? গুগলে সার্চ করুন৷ বিশাল সংখ্যক ফেসবুক ব্যবহারকারীর অনেকেই কিন্তু চাকরি খুঁজছে৷ অঞ্চলভেদে সেসব চাকরি প্রার্থীরা আবেদন করছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে৷ আজকাল সময় বাঁচাতে বা সেসব চাকরি প্রার্থীদের সম্পর্কে তথ্য খুঁজতে নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো কিন্তু বেছে নেয় ফেসবুক প্রোফাইল৷ আর চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানটির এই কাজ সহজ করে দিতে পারে কোন এক ফেসবুক আসক্ত!
বর্তমানে সামাজিক নেটওয়ার্কিং এর জন্য রয়েছে অনেক সুযোগ৷ ফেসবুক, টুইটার, অর্কুটসহ অনেক ওয়েবসাইট৷
এতসবের মধ্য থেকে সঠিক প্রতিষ্ঠানের জন্য সঠিক সামাজিক মাধ্যম কোনটি৷ আবার একাধিক মাধ্যম ব্যবহার করতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির কর্মপরিকল্পনা কেমন হওয়া চাই৷ ফেসবুক আসক্তদের জন্য আরেকটি কাজের সুযোগ৷ পদবী: সামাজিক মাধ্যম পরিকল্পনাকারী!
এবার বলবো সবচেয়ে লোভনীয় চাকরিটির কথা৷ ওবামার চেইঞ্জ তত্ত্বের সঙ্গে গলা মিলিয়ে অনেক প্রতিষ্ঠানই তাদের কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এবং সেই সঙ্গে ইন্টারনেট নেটওয়ার্কিং এর কর্মপ্রণালিতে পরিবর্তন আনতে শুরু করেছে৷ ইন্টারনেট ব্যবস্থাকে সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে চায় তারা৷ আর তাই প্রয়োজন সামাজিক মিডিয়া সম্পর্কে জানে এরকম একজন বিশেষজ্ঞকে৷ হয়ে গেল! পদবী: এন্টারপ্রাইজ আর্কিটেক্ট৷
বিশ্বের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানই তাদের গ্রাহক বা ভোক্তার কাছ থেকে পণ্য বা সেবা সম্পর্কে মতামত চায়৷ আর তাই গতানুগতিক চিঠিপত্র বা ই-মেইল (!) ব্যবস্থাকে সরিয়ে এখন চাই আরো স্বচ্ছ এবং গতিময় মাধ্যম৷ কি আর করা৷ গ্রাহক বা ভোক্তার জন্য তৈরি করো ফেসবুক পেইজ বা ব্লগ সাইট কিংবা টুইটার ফিড৷ আর সেগুলো দেখভাল করা এবং সেই সঙ্গে গ্রাহক বা ভোক্তার কাছ থেকে পাওয়া মতামতকে সঠিকভাবে উপস্থাপনের জন্য দরকার বিশেষজ্ঞ৷ পদবী: ইউজার অপারেশনস এনালিস্ট৷
চলুন বকবকানির ইতি টানি৷ সর্বশেষ পদটির নাম ডিরেক্টর অফ সোশ্যাল মিডিয়া৷ এই পদে যিনি অসীন হতে চান তাঁর অবশ্যই ব্লগিং, সামাজিক নেটওয়ার্কে মার্কেটিং কিংবা পডকাস্টের মতো বিষয়গুলো সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে৷ জানতে হবে কিভাবে ব্যবসার স্বার্থে কাজে লাগানো যায় ফেসবুক, টুইটার, মাই স্পেস কিংবা ইউটিউটবকে৷
অনেক হলো৷ প্রশ্ন জাগতে পারে এতসব চাকরি পাবো কোথায়? এজন্যও ভরসা ইন্টারনেট৷ বাংলাদেশ, ভারত বা বিশ্বের যেকোন দেশে এখন বেশ জনপ্রিয় চাকরি খোঁজার ওয়েবসাইটগুলো৷ এসব সাইটে চাকরি খোঁজার সময় ব্যবহার করুন ‘‘সোশ্যাল মিডিয়া”, ‘‘ইন্টারঅ্যাকটিভ মার্কেটিং”, ‘‘নিউ মিডিয়া” কিংবা ‘‘ব্র্যান্ডিং ম্যানেজার” শব্দগুলো৷
প্রতিবেদক: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: আবদুস সাত্তার