টিকিট কালোবাজারি এখন ই-কমার্স সাইটে

0

Khans

প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি যাওয়ার জন্য স্টেশনে নির্ঘুম রাত্রী যাপন করে ট্রেনের টিকেট কিনছেন অনেকেই। বিভিন্ন বাস টার্মিনালে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে টিকেট পাওয়ার সংখ্যাটাও কম নয়।

তবে পর্যাপ্ত টাকা খরচ করলে কষ্ট না করেই ঘরে বসেই পাওয়া যাচ্ছে বাড়ি ফেরার বাস-ট্রেন কিংবা প্লেনের টিকিট।

স্টেশন কিংবা বাস টার্মিনালের পাশাপাশি টিকিট কালোবাজারিরা এখন তৎপর অনলাইন ই কমার্স সাইটগুলোতেও।

অনলাইনে পণ্য কেনা-বেচার সাইটগুলোতে ‘পণ্যের’ পাশাপাশি এখন বিক্রি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাওয়ার বাস-ট্রেন ও প্লেনের টিকিট।

বাংলানিউজের অনুসন্ধানে জানা গেছে, অনলাইন কোটা থেকে রেলওয়ের ওয়েবসাইট থেকে ই-টিকেট কিনে দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে এগুলো বিক্রি করা হচ্ছে ই-কমার্স ওয়েবসাইটগুলোতে।

সাধারণত রেলওয়ের ওয়েবসাইটে একটি অ্যাকাউন্ট বা ইমেইলের বিপরীতে সর্বোচ্চ ৪টি টিকেট কেনা যায়। আর এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই ফেক (নকল) অ্যাকাউন্ট খুলে ২৪ থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত অসংখ্য টিকিট কিনে রাখছেন।

অনলাইনে টিকেটের টাকা পরিশোধের পর ক্রেতাকে ইমেইল পাসওয়ার্ড সম্বলিত একটি ই-টিকিট পাঠায় রেলওয়ে, যেখানে একটি পিন নম্বর দেয়া থাকে।

আর অসাধু এই ব্যবসায়ীরা সেই পিন নম্বরটি বিক্রির বিজ্ঞাপন দেন ওএলএক্স, এখানেই ডটকম, ক্লিকবিডি ও বিক্রয় ডটকমের মতো পণ্য কেনাবেচার ওয়েবসাইটে। স্টেশনে গিয়ে পিনকোডটি মুখে বললেই টিকেট দেয়া হয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ক্লিকবিডি ডটকমে ২৪ জুলাই তারিখে সুবর্ণ এক্সপ্রেসে চট্টগ্রামের (শোভন চেয়ার) একটি টিকিট বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়েছেন মোহাম্মদপুরের এক বিক্রেতা।  রেলওয়ে কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়া ৩৭৫ টাকা হলেও ঈদের বাজার বলে টিকিটটির দাম সাড়ে ৭শ’ টাকা দাবি করা হয়।

উপল নামে এক বিক্রেতা ২৬ জুলাইয়ের ঢাকা-দিনাজপুর রুটের দ্রুতযান এক্সপ্রেসের সাড়ে ৪শ’ টাকার টিকেট বিক্রির বিজ্ঞাপন দিলেও বাংলানিউজের পক্ষ থেকে তাকে ফোন করা হলে তিনি টিকিটের দাম ৬শ’ টাকা দাবি করেন।

শুধু রেলওয়ের ওয়েবসাইট থেকেই নয়, অপারেটরগুলোর কাছ থেকেও মোবাইলে টিকিট কিনে ইচ্ছে মতো দাম হাঁকানোর প্রমাণ রয়েছে বাংলানিউজের কাছে।

এছাড়া যারা একটু আরামদায়কভাবে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে প্লেনে বাড়ি যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন তাদেরও গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত পয়সা।

খান (ইউজার নেম) নামে এক ব্যবসায়ী এখানেই ডটকমে ২৭ ও ২৮ জুলাইয়ের সাড়ে তিন থেকে ৪ হাজার টাকার যশোরের প্লেনের টিকেটের দাম হাঁকিয়েছেন ৬ হাজার টাকা।  তবে পরবর্তীতে তাকে ফোন করা হলে তিনি বলেন ‘এই দামে আর টিকিট নাই’। পরে অবশ্য ৮ হাজার টাকা দিতে চাইলে টিকিট বিক্রিতে সম্মত হন তিনি।

দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে প্লেনের টিকেট কিনতে কোন আনুষ্ঠানিকতার প্রয়োজন হয় না, কিন্তু কতিপয় ট্রাভেল এজেন্সির কর্মকর্তাদের যোগসাজশে টিকিট কিনে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন কিছু অসাধু ব্যক্তি।

কালোবাজারির আধুনিক এই ধরনের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা কিংবা ব্যবস্থা গ্রহণের পরিকল্পনা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ে ঢাকা জোনের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, “অনলাইনে এ রকম কেনাবেচা চিহ্নিত কিংবা নজরদারি করার মতো কোন ব্যবস্থা আমাদের কাছে নেই।  অনলাইনে এ ধরনের কালোবাজারির কোন অভিযোগও আমাদের কাছে নেই।  অভিযোগ পেলে আমরা সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেব।”

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More