বাবার শোকে পাথর মিথিলা

0

বুধবার রাত নয়টা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাশঘরের সামনে আহাজারি চলছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেল তার নাম মিথিলা। সে নিহত মকবুল হোসেনের একমাত্র সন্তান। বাবার আকস্মিক মৃত্যুতে রীতিমতো বাকরুদ্ধ মিথিলা।

চিৎকার করে করে কাঁদছিলেন মকবুলের স্ত্রী হালিমা খাতুন। তার কান্নার চিৎকারে হাসপাতালের শতাধিক লোক জড়ো হন।

বারবার চিৎকার করে লাশঘরের সামনে বসে পড়ে মিথিলাকে জড়িয়ে কাঁদতে থাকেন হালিমা। কাঁদতে কাঁদতে মেয়েকে বলছিলেন, মাগো আর কান্দিস না, তোর বাবা আর নাই। তোর বাবাকে জমে নিয়ে গেছে।

কিন্তু মায়ের কথা যেন কানে আসছিল না মিথিলার।বাবার লাশের দিকে তাকিয়ে নীরবে চোখের জল ফেলেই যাচ্ছিল মেয়েটি।

বিএনপির অঙ্গসংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। তবে মকবুল মূলত জুতায় কারচুপির লাগানোর কারখানা চালিয়ে পরিবার পরিজনের অন্ন জোগাতেন। বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশ-বিএনপি নেতাকর্মীর সংঘর্ষে নিহত হন মকবুল হোসেন।

১০ ডিসরম্বরের সমাবেশ উপলক্ষ্যে গত দুইদিন ধরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান করছিলেন তিনি। নিহত মকবুলের দেহে শত শত ছড়াগুলির ক্ষত।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন মকবুল হোসেন। তবে নিহতের পরিবারের সদস্যরা অজানা আতঙ্কে তার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করছেন না।

মকবুল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানার আব্দুস সামাদের ছেলে। তিনি পল্লবীর লালমাটি টিনশেড কলোনি এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।

মকবুলের স্ত্রী হালিমা খাতুন জানান, সকালে কারচুপির পুঁতি কিনতে বড় বোনের কাছ থেকে এক হাজার টাকা নিয়ে বের হয়েছিলেন মকবুল।

ঘণ্টাখানেক পরে মোবাইলে কথা হলে মকবুল জানান তিনি মিরপুর ১১ নম্বরে আছেন। তখন মিথিলা নাস্তা খেয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করেন? উত্তরের বলেছিলাম হ্যাঁ। এটাই ছিল মকবুলের সঙ্গে শেষ কথা।

হালিমার দাবি তার স্বামী রাজনীতি করতেন না। তবে, মকবুলের ভাই নূর হোসেন জানান, তার ভাই বিএনপির কর্মী ছিলেন।

এর আগে, বুধবার বিকেল ৪টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মকবুলকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কিছুক্ষণ পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

jugantor

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More