ঢাকা: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ থেকে শুল্ক কর্মকর্তাদের মারধর করে মালামাল ছিনতাইয়ের ঘটনায় চক্রের প্রধানসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার রাতে মিরপুরের বেনারশী পল্লী থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সিনিয়র সহকারী পরিচালক মেজর মাকসুদুল আলম।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- চক্রের প্রধান বদরুল আলম শ্যামল (৩৭), ফখরুল আলম প্রিন্স (৩৩) ও মো. আসিফুজ্জামান পাপন (২৬)।
র্যাব জানিয়েছে, গত ১০ আগস্ট ২০ থেকে ৩০ জনের একটি সশস্ত্র ক্যাডার দল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের কুরিয়ার গোডাউন থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকার মালামাল ছিনিয়ে নেয়। তাদের বাধা দিলে শুল্ক কর্মকর্তাদের তারা মারধরও করে। ওই ঘটনায় কুরিয়ার ইউনিটের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. শাহজাহান আলী বিমানবন্দর থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করে র্যাব-১ এ অভিযোগ দেন। এরপরই তারা অভিযানে নামে।
এই চক্রটি চোরাইভাবে বিভিন্ন পণ্য আমদানি করে আনে এবং কাস্টমস কর্মকর্তাদের হুমকি দিয়ে জোর করে এসব পণ্য বিমানবন্দর থেকে বের করে নেয় বলেও র্যাব জানতে পেরেছে।
র্যাবের কাছে অভিযোগ আছে, গত ২৮ জুলাই ঢাকা কাস্টম হাউসে ঢুকে এক সহকারী কমিশনারের হাত কেটে ফেলারও হুমকি দিয়েছিল শ্যামল। সে বিমানবন্দরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তার পোষ্টার ফেস্টুন টানানো রয়েছে। সে বিভিন্ন রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে চোরাচালান করে থাকে। গত বছর শ্যামলের সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে দুটি বিলাসবহুল চোরাই প্রাইভেটকার আটকও করেছিল গোয়েন্দা পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছে, এর আগেও একাধিকবার শ্যামল কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জোর করে মালামাল কুরিয়ার গোডাউন থেকে বের করে নিয়ে যায়। শ্যামল যেসব পণ্য কুরিয়ার গোডাউন থেকে বের করে নিয়েছে, সেগুলো বেশিরভাগই চোরচালান পণ্য। এমনকি আধিপত্য বিস্তার নিয়ে অন্য চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ সিন্ডিকেটের সাথে তার গ্রুপের একাধিকবার সংঘর্ষও হয়। ২০১৪ সালের আগস্ট মাসের এমন একটি ঘটনায় উভয়পক্ষ থানায় মামলাও করে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার উপ-পরিচালক মেজর রুম্মান মাহমুদ বলেন, ‘শুধু শুল্ক কর্মকর্তাদেরই নয় সিএন্ডএফ এজেন্টকে মারধরের অভিযোগ রয়েছে এই বাহিনীর বিরুদ্ধে। এসএমআই ওয়ার্ল্ড ওয়াইড এক্সপ্রেস কুরিয়ার সার্ভিস ও সিএন্ডএফ লাইসেন্সের আড়ালে শ্যামল ও তার লোকজন চোরাইপথে আমদানি নিষিদ্ধ ওষুধ, মুঠোফোনসহ বিভিন্ন পণ্য আনে। সোনার চোরাচালানেও তার সম্পৃক্ততার অভিযোগ পাওয়া গেছে।’
এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র্যাব চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।