টাকাভর্তি ব্যাগ মালিককে ফিরিয়ে দিলেন সার্জেন্ট হাবিব

0

sarjent habibঢাকা: পুলিশের অনেক নেতিবাচক খবরের মাঝে ইতিবাচক খবরও আছে। এবার এক পুলিশ সার্জেন্টের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এক যুবক ফিরে পেয়েছেন তার ব্যাগে থাকা নগদ পাঁচ লাখ টাকা এবং ল্যাপটপ।

যে সার্জেন্টের প্রত্যুৎপন্নিমতায় শরীফ তার নগদ টাকাসহ ব্যাগ ফিরে পেয়েছে তার নাম আহসান হাবিব প্রামাণিক। তিনি ডিএমপি’র কোতোয়ালি জোনে কর্মরত। এ ব্যাপারে সার্জেন্ট আহসান হাবিবের সাথে যোগাযোগ করে জানা যায়, তিনি ২০১১ সালে পুলিশে যোগ দেন। তিনি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ থানার উত্তর দলগ্রাম পাটেয়ারীটারী গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা স্কুল শিক্ষক। এর আগেও তিনি সংবাদ পেয়ে জীবন বাজি রেখে রাজধানীর কাকরাইল এলাকা থেকে তাৎক্ষণিক অটোরিকশা ছিনতাইকারীদের আটক করেন।

আহসান হাবিব নিউজবাংলাদেশকে বলেন, “ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল মানুষের উপকার করার। একজন পুলিশ সদস্য হিসেবে বাকি জীবনেও মানুষের উপকার করে যেতে চাই। মানুষের উপকার করার এ দীক্ষা আমি আমার পিতার কাছ থেকে পেয়েছি।”

ঘটনার বর্ননা দিয়ে তিনি জানান, রাজধানীর নিকুঞ্জের বাসিন্দা শরীফ আহমেদ সিএনজি অটোরিকশায় করে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় কেরানীগঞ্জ থেকে বাবুবাজার ব্রিজে এসে নামেন। কিন্তু নামার সময় তার সাথে থাকা ব্যাগ অটোরিকশায় রেখে নামেন। ভাড়া দিয়ে ব্যাগ হাতে নিবেন। তাই ভাড়া দেয়ার জন্য পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করছেন। কিন্তু ভাড়া না নিয়েই অটোরিকশা দ্রুত ঘুরে বিপরীতে চলতে থাকে।

শরীফের মাথা ঘুরে যায়। কারণ ব্যাগে রয়েছে তার বাড়ি নির্মাণের জন্য নগদ ৫ লাখ টাকা ও ল্যাপটপ। কার কাছে অভিযোগ করবে বুঝতে পারছিলেন না শরীফ। অগত্যা সামনে একজন পুলিশ সার্জেন্টসহ কয়েক পুলিশকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে দৌড়ে তাদের শরণাপন্ন হন।

পুলিশ দল তাকে সান্ত¦না দিয়ে বসতে বলেন। আর সাথে সাথেই পুলিশের সেই সার্জেন্ট তার মোটরসাইকেলে রওনা দেন শরীফকে বহনকারী স্কুটারটির পেছনে। অন্য পুলিশ সদস্যরা এ সময় তাকে সান্তনা দিচ্ছিলেন। এ সময় প্রতি মিনিট যেন তার কাছে কয়েক যুগ বলে মনে হচ্ছিল।

শরীফের অপেক্ষার পালা আর শেষ হচ্ছে না। আর কি করা যায় বুঝতেও পারছে না শরীফ। প্রায় ১৫ মিনিট পর পুলিশ সার্জেন্ট শরীফের হারিয়ে যাওয়া ব্যাগ ও অটোরিকশা ও তার চালককে নিয়ে হাজির। তবুও যেন বিশ্বাস করতে পারছিল না শরীফ। তার সামনে সেই ব্যাগ। তখনো তার মনে সন্দেহ টাকা ফিরে পাওয়ার সন্দেহ। ব্যাগ খুলে দেখেন যে সব কিছু ঠিকঠাক আছে।

পুলিশ এ সময় আইনগত ব্যবস্থা নিতে চালক কালামকে থানায় নিয়ে যেতে চাইলে শরীফ তার অর্থ ও মালামালসহ ব্যাগ ফিরে পাওয়ায় এবং চালক ক্ষমা চাওয়ায় তাকে ছেড়ে দিতে পুলিশকে অনুরোধ করেন। শরীফ এবার ভালো করে সার্জেন্টের দিকে তাকান। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। খুশি হয়ে বলেন, ভাই আমার টাকা উদ্ধার করেছেন। এখান থেকে আপনার যা খুশি টাকা নেন।

পুলিশ সার্জেন্ট সেই টাকা নামিয়ে বরং ব্যাগ বন্ধ করে বলেন, আপনার হারিয়ে যাওয়া টাকা ও ব্যাগ উদ্ধার করা পুলিশের নৈতিক দায়িত্ব। আমি তা পালন করেছি মাত্র। এর জন্য আমি কোন অতিরিক্ত সুযোগ নিতে পারি না। উল্টো পুলিশ সার্জেন্ট তাকে চা পান করান এবং পরে অন্য একটি গাড়িতে তাকে নিরাপদে যাত্রার ব্যবস্থা করেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More