ব্রিটেনের গণভোট ও কিছু পর্যবেক্ষণ (পর্ব-১)

0

[ads1]জয়শ্রী দত্ত: ব্রিটেন এ গতকাল গণভোটের মাধ্যমে ইইউ ত্যাগ করার পক্ষের ভোট জয়যুক্ত হয়েছে ৷ আমাদের মতো সকল বর্তমান ইমিগ্রান্ট এবং ভবিষ্যতের ইচ্ছুক ইমিগ্রান্টদের জন্য এই ভোট অনেক গুরুত্ব বহন করে৷

Joysree-2এই ইউরোপীয়ান ইউনিয়নটা কী ,কেন ফর্ম হয়েছিল তা না জেনেই অনেকেই এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন, অর্থাৎ এর উপকারিতা ভালভাবে জানা ছাড়াই ভোটে অংশগ্রহণ করেছেন যার ফল সুদূরপ্রসারী ৷ এই ত্যাগের পক্ষে জয়যুক্ত হবার কারণে আপাতদৃষ্টিতে কী কী পরিবর্তন আসতে পারে তার একটা সংক্ষিপ্ত ধারণা আমাদের অনেকের হয়েছে, ইতিমধ্যে যার পক্ষে বিপক্ষেও অনেক মত প্রকাশ করা হয়েছে ৷

তবে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন ঘটবে ইমিগ্রেশন সিস্টেম এ এবং সম্প্রদায়গত সহনশীলতায় ৷

এই নিয়ে সার্বিকভাবে কিছু উদ্বেগের কথা সংক্ষিপ্ত আকারে লিখতে চাই:

১. ইইউ হয়েছিল মূলত সমগ্র ইউরোপের জন্য একটা কমন বাজার তৈরি করার জন্য যেখানে এক দেশ অন্য দেশের সাথে প্রতিযোগিতামূলক কোনো বৈষম্য না করে ,অন্য দেশের অর্থনীতি ধ্বংস না করে,বরং অপেক্ষাকৃত গরিব দেশকে ধনী দেশগুলো সাহায্য করে সুখে-দু:খে একত্রে বিপদের ও অন্য আগ্রাসী বিশ্বের রক্তচক্ষু মোকাবেলা করা৷ এটা হবার আগে এই দেশগুলা নিজেদের মধ্যে কেবলই যুদ্ধ করতে করতে প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছিলো ৷ ব্রিটেন ছিল নবম সদস্য এই ইউনিয়নের ৷[ads1]

কিন্তু ব্রেক্সিটের মাধ্যমে ব্রিটেন এখন ইউনিয়ন পাড়া থেকে সরে গিয়ে একা হয়ে গেলো যেটার ফল আগামীতে খুব স্পষ্ট হবে ৷

২. কেন এই গণভোট দিতে হলো: ব্রিটেন অপেক্ষাকৃত একটু বেশি ওয়েলফেয়ার এর দেশ, যেখানে যেকোনো অভিবাসীর ছয় মাসের বেশি বৈধ ভিসা থাকলেই শিক্ষা, চিকিৎসার মতো বেসিক অধিকার কিন্তু ব্যয়বহুল সেবাগুলো একদম ফ্রি দেয় ব্রিটিশ নাগরিকদের মতোই, আবার ইইউ’র নাগরিকরা এদেশে আনসেটল্ড অন্য নন-ইইউদের চেয়ে আরো একটু বেশি সুবিধা পান, যেমন সরকারি বাসস্থান, ফ্রি আইনি সেবা, পড়াশুনার গ্রান্ট, ভিসা রেস্ট্রিকশন না থাকায় চাকরির সুবিধা ইত্যাদি৷

ব্রিটেনের এই সোশ্যাল বেনিফিটের উদারতার জন্য এটা পৃথিবীর অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় আকর্ষণীয় ভূমি৷ আর সেটারই সুযোগ নিচ্ছে অনেক বছর ধরে পৃথিবীর সব প্রান্ত থেকে যেকোনোভাবে আসা কিছুসংখ্যক অলস ও লোভী, সুচতুর মানুষ, যার চরম মূল্য আজ দিতে হলো ব্রিটেনকে! ব্রিটেনের উপর অভিবাসনের এই চাপই মূলত গণভোটের কারণ৷

৩. কাদের বেশি আগ্রহ ছিল ত্যাগের পক্ষে: জরিপে দেখা গেছে, লন্ডন সিটি থেকে দূরবর্তী অঞ্চলগুলিতে এর ভোটার ছিল বেশি, কারণ বনেদী /আদি ব্রিটিশ মানসিকতার মানুষেরা অপেক্ষাকৃত একটু বেশি বর্ণবাদী, তারা সিটি থেকেও দূরে থাকেন শুধুমাত্র অভিবাসীদের ভয়ে, তারা সিটিতে অভিবাসীদের আধিপত্য পছন্দ করেন না ৷[ads1]

এর পরের উল্লেখযোগ্য ভোটাররা হচ্ছেন বয়স্করা, তারাও তাদের দেশে অন্য জাতি, বর্ণের মানুষদের জন্য বিরূপ ধারণা পোষণ করেন৷

এর পরের ত্যাগের পক্ষের ভোটারদের কিছুটা অদ্ভুত লাগলো আমার কাছে ,যারা কিনা নিজেরাই অভিবাসী এক প্রজন্ম বা কয়েক প্রজন্ম ধরে, অথচ ইউরোপিয়ান ইমিগ্রান্টদের বের করে দেবার পক্ষে ভোট দিয়েছেন, কারণ তাদের ধারণা ইউরোপিয়রা চলে গেলে ঊনারা সরকারি রেশনের এক মুঠো ভাত বেশি খেতে পারবেন, অরিজিনাল সাদারা এদের আর অচ্ছুৎ বলে গালি দেবে না, কিংবা নিরাপদ জীবন যাপন করতে পারবেন ! আসলে কি সেটাই হবে? [ads1]

সূত্রঃ উইমেন চ্যাপ্টার

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More