জানতেনই নিজের জীবনের ষোলআনা ঝুঁকি আছে। জানতেন, অবধারিত ভাবেই মৃত্যু অপেক্ষা করে আছে। কিন্তু, এ-ও জানতেন, তিনি না ঝুঁকি নিলে, অনেকগুলো বাচ্চাকে একসঙ্গে প্রাণ হারাতে হবে। তাই, কালক্ষেপ না-করে, মুহূর্তের সিদ্ধান্তে নিয়ন্ত্রণ হারানো একটি গাড়ির সামনে গিয়ে ভিড়িয়ে দেন নিজের গাড়িটিকে।
তাতে তাঁর গাড়িটির কী দশা হতে পারে, ওই পুলিশ অফিসারের কাছে তা প্রত্যাশিতই ছিল। চোখের পলকে দলপাকানোর মতো করে তুবড়ে যায় গাড়িটি। কিন্তু, নিশ্চিত বিপদের হাত থেকে বেঁচে যায় স্কুলপড়ুয়ারা। একসঙ্গে কয়েকশো শিশুর প্রাণ বাঁচিয়ে আমআদমির চোখে তাই ‘হিরো’ রাশিয়ার ওই পুলিশ অফিসার, যাঁর নাম আলেক্সজান্ডার কসোলাপভ।
কথায় বলে, ভাগ্য সবসময় সাহসীদের সঙ্গে থাকে। আলেক্সজান্ডারের ক্ষেত্রে তাই হয়েছে। নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফিরেছেন তিনি। হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে থাকা রাশিয়ান ওই পুলিশ অফিসার অবশ্য নিজেকে নিয়ে এতটুকু বিচলিত নন। স্কুলের ছোট ছোট বাচ্চাগুলো যে শেষ পর্যন্ত প্রাণে বেঁচেছে, তাতেই স্বস্তি তাঁর।
গত শনিবার সামার ক্যাম্প থেকে ন’টি বাসে প্রায় ৩০০ স্কুলের বাচ্চা ফিরছিল দক্ষিণ সাইবেরিয়ার আবাকান শহরে। ওই বাসগুলোকে পথদেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন আলেক্সজান্ডার। হঠাত্ই লক্ষ করেন, উলটো দিক থেকে একটি গাড়ি দ্রুত বেগে ছুটে আসছে সামনের স্কুলবাসগুলোর দিকে। বড় বিপদের আশঙ্কায় মুহূর্তের সিদ্ধান্তে নিজের পেট্রোলিং গাড়িটির স্পিড বাড়িয়ে, ব্রেক-ফেল-করা ওই গাড়িটির পথ আগলে দাঁড়ান আলেক্সজান্ডার। তাঁর মুহূর্তের এই সিদ্ধান্তই বাঁচিয়ে দিয়েছে খুদে স্কুলপড়ুয়াদের।
এর মধ্যে অজস্র চিঠি পেয়েছেন ওই পুলিশ অফিসার। শিশুদের প্রাণরক্ষার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে এসেছে এই চিঠিগুলো। হাসপাতালে তাঁকে দেখতে এসেছিল সেই বাচ্চাগুলোও, যাদের তিনি প্রাণে বাঁচিয়েছেন। ওই হাসমুখগুলো দেখে সব যন্ত্রণা ভুলেছেন সেই পুলিশ আধিকারিক।