ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো ঋণের সুদ হার কমিয়ে ১৪ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে আমানতের সুদের হারও কমিয়ে আনা হয়েছে।
নতুন সুদ হারে উদ্যোক্তারা মেয়াদি ঋণ পাবেন ১৩ শতাংশ সুদে, চলতি মূলধন ১৪ শতাংশে, বাণিজ্যিক সাধারণ ঋণ ১৩ থেকে ১৪ শতাংশ, এসএমই খাতে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ১৪ শতাংশ এবং নারী উদ্যোক্তা হলে ১০ শতাংশ, আমদানি ঋণ ১৪ শতাংশ, স্বীকৃত বিলের বিপরীতে সৃষ্ট ফোর্সড ঋণে ১৪ শতাংশ, নগদ সহায়তার বিপরীতে আগাম ঋণে ১৪ শতাংশ, আইবিপি ১৪ শতাংশ হারে।
আগে এই ব্যাংকগুলো ১৬ শতাংশ পর্যন্ত সুদ নিচ্ছিল এসব ঋণে। পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনায় নতুন হারও বাড়তে বা কমতে পারে বলে ব্যাংকাররা জানিয়েছেন।
সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক, বিডিবিএল ও কৃষি ব্যাংক ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে নতুন এই সুদ হার কার্যকর করেছে।
উদ্যোক্তারা দীর্ঘদিন ধরে সুদ হার কমানোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এর প্রেক্ষাপটে গত জানুয়ারিতে ওই সাত ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা এক বৈঠকে সুদ হার কমানোর সিদ্ধান্ত নেন।
ওই বৈঠকেই সর্বোচ্চ সুদ হার ১৪ শতাংশ ঠিক করে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে তা কার্যকরের সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি মেয়াদী আমানতের সুদ হারও এক শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনে ব্যাংকগুলো।
এসব ব্যাংক থেকে আমানতকারীরা এখন সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ সুদ পাবেন। এর আগে সর্বোচ্চ ৮ শতাংশ সুদ দিত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো।
রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম ফরিদ বলেন, ‘বিভিন্ন কারণেই ঋণের সুদ হার কমানো হয়েছে। প্রথমত বিনিয়োগ উৎসাহিত করা। বড় বড় বিনিয়োগকারীরা অনেক দিন ধরে বলে আসছেন, আমাদের সুদ হার বেশি হওয়ায় বিনিয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে না। এখন আমরা কমিয়েছি, আশা করি বিনিয়োগকারীরা আসবেন। এছাড়া আমাদের হাতেও বিনিয়োগযোগ্য তহবিল রয়েছে। সেগুলো বিনিয়োগে যাওয়া দরকার। আর সুদ হার কমানোর ফলে এখন থেকে ঋণ খেলাপিও কম হবে। ’
রূপালী ব্যাংক সবচেয়ে বেশি সুদ কমিয়েছে গৃহনির্মাণ ঋণে। এই ঋণের সুদ হার ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। আর ফ্ল্যাট কেনায় আগের ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১১ শতাংশ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত এই সাত ব্যাংক বিতরণ করা ঋণের প্রায় ২২ শতাংশ বিতরণ করে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ৫ লাখ ৫৩ হাজার ৭৫ কোটি টাকা।
এর মধ্যে এই সাত ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ এক লাখ ২১ হাজার ১৩৭ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২১ দশমিক ৯০ শতাংশ।
Next Post