ঢাকা: রাজনৈতিক অবস্থান শক্ত রাখতে সাংগঠনিক কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করার উপর জোর দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে সাংগঠনিক তৎপরতা অব্যাহত রাখার উদ্যোগ নিয়েছে দলটি।
এর অংশ হিসেবে প্রথমে সব পর্যায়ের সম্মেলন প্রক্রিয়া শেষ করা হচ্ছে। চলতি বছরের মধ্যে এ কাজ শেষ করা হবে বলে দলটির দায়িত্বশীল নেতারা জানান।
ইতিমধ্যেই দলের তৃণমুল পর্যায়ের সম্মেলনের কাজ শেষ হয়েছে এবং জেলা পর্যায়ে সম্মেলন চলছে। চলতি বছর ডিসেম্বরের মধ্যে কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা জানান।
সংগঠনকে সক্রিয় রাখতে সম্মেলনের পর ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হবে। এ সব কর্মসূচির মধ্যে নতুন সদস্য সংগ্রহ, সদস্য পদ নবায়ন, প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম থাকবে বলে ওই নেতারা জানান।
এদিকে সাংগঠনিক কাঠামোকে শক্তিশালী করতে বিভিন্ন অভিজ্ঞতাকেও কাজে লাগাবে আওয়ামী লীগ। দলটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বুধবার চীনে গেছেন। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে প্রতিনিধি দলটি ১০ দিন অবস্থান করবেন সেখানে। এ সময় তারা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সাংগঠনিক কাঠামো ও কার্যক্রম পরিচালনা পর্যবেক্ষণ করবেন।
চীনের ক্ষমতাসীন এ পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করতে ও জানতে দেশটির কেন্দ্র থেকে গ্রাম পর্যায়ে গিয়ে কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন বলে এই প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য আওয়ামী লীগের আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক কর্ণেল (অব.) ফারুক খান বাংলানিউজকে জানান।
গত ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সাংগঠনিক কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়ে দলটির। ২০১৩ সালের পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং ২০১৪ সালে উপজেলা নির্বাচনে সাংগঠনিক দুরাবস্থা ধরা পড়ে। ওই সময় পাঁচ সিটি করপোরেশনের ৫টি মেয়র পদেই আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা পরাজিত হয়। সাংগঠনিক দূর্বলতা এর অন্যতম কারণ বলে দলের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন।
এদিকে ৭৩টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে অধিকাংশ জেলার সম্মেলন সম্পন্ন করেছে দলটি। রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন বাংলানিউজকে বলেন, এ বিভাগের সবগুলো জেলা ও উপজেলার সম্মেলন হয়েছে। এখন সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়াতে তৃণমুল পর্যায়ে কিছু কর্মসূচি হাতে নেয়া হবে।
সিলেট বিভাগের মেয়াদ উত্তীর্ণ সবগুলো জেলার সম্মেলন হয়েছে বলে এ বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ জানান।
চট্রগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জেলার সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। এ বিভাগের তিনটি জেলার সম্মেলন বাকী রয়েছে বলে জানা গেছে।
ঢাকা বিভাগের ২১টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ১০টি জেলায় সম্মেলন হয়েছে এবং ১১টি জেলার সম্মেলন বাকী রয়েছে। ঢাকা বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ১০টি জেলার সম্মেলন হয়েছে। ১৯ ও ২০ মে শেরপুর ও জামালপুর জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বরিশালের ৭টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে চারটির সম্মেলন হয়েছে এবং তিনটি জেলার সম্মেলন বাকী আছে। দ্রুতই এ জেলাগুলোর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হবে বলে বরিশাল বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলানিউজকে জানান।
এদিকে দলের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর মধ্যে যেগুলোর কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে এবং দীর্ঘ দিন ধরে সম্মেলন হচ্ছে না সেগুলোর সম্মেলন করতেও তাগিদ দেয়া হবে বলে জানান দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।