অপরিপক্ক নেতৃত্ব, উৎসব নেই ছাত্রলীগে!

0

Chattroleaugeঢাকা: যোগ্য নেতৃত্বের বদলে ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটিকে অপরিপক্ক বলছেন সাবেক নেতারা। আর এতে করে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন নেতাকর্মীরা। প্রতিবার কমিটি ঘোষণা হওয়ার সাথে সাথে দেশব্যাপী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে যে উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা যায় এবার আর তা দেখা যাচ্ছেনা।

সদ্যসাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন নেতার সাথে কথা বলে দেখা গেছে, বর্তমানে যাদের হাতে ছাত্রলীগের নেতৃত্বভার তুলে দেয়া হয়েছে তারা আসলেই এর যোগ্য কিনা, এ নিয়ে সংশয় আছে খোদ ছাত্রলীগেরই উর্ধ্বমহলে। সিনিয়র নেতাদের অনেকেই এই কমিটির উপর ভরসা রাখতে পারছেন না।
গত ২৫-২৬ জুলাই সম্মেলনে নির্বাচনের মাধ্যমে সাবেক পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সাইফুর রহমান সোহাগ ও সহ-সম্পাদক এস এম জাকির হোসেনকে ছাত্রলীগের সভাপতি- সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। অভিযোগ আছে, ওই নির্বাচন ছিল পুরোটাই লোকদেখানো। মূলত এই দুজন নেতৃত্ব পেয়েছেন একধরনের কোটায়।

জানা গেছে, ছাত্রলীগের প্রধান নেতৃত্বে প্রতিবারই বৃহত্তর ফরিদপুরের একটি বড় প্রভাব থাকে। সে হিসেবে এবার ওই কৌটায় নির্বাচিত হয়েছেন সাইফুর রহমান সোহাগ। এছাড়াও বিগত কয়েকটি কমিটিতে সিলেটের কোনো প্রতিনিধি না থাকায় এবার ওই অঞ্চল থেকে জাকির হোসেনকে বাছাই করা হয়েছে। অর্থাৎ আঞ্চলিক প্রভাবই ছিল ছাত্রলীগের নেতা নির্বাচনের ‘টার্নিং পয়েন্ট’। সেক্ষেত্রে অন্যান্য অঞ্চলের অনেকেরই যোগ্যতা থাকলেও তাদেরকে বাদ দিয়ে এ দুজনকে আনা হয়েছে।

জানা গেছে, এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে কথিত প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা জানালেন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা লিয়াকত শিকদারের সিন্ডিকেটই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে মূল প্রভাবক। বিষয়টি এমন দাঁড়িয়েছে যে, লিয়াকত শিকদারের রাজনীতি করাই সবচেয়ে বড় যোগ্যতা। নানান কৌশলে লোকদেখানো নির্বাচন দিয়ে তিনি প্রতিবারের মত এবারও তার নেতা বের করে এনেছেন। আর এতে করে বাদ পড়ে গেছেন অনেক যোগ্য সিনিয়র নেতারা।

জানা গেছে, নতুন কমিটিতে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তাদের এর আগে বড় পর্যায়ে নেতৃত্বের কোন অভিজ্ঞতা নেই। সোহাগ সদ্য সাবেক কমিটির পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। এর আগে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আর জাকির হোসেন কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক ছিলেন। দুজনেরই আগে বড় পর্যায়ে কোথাও নেতৃত্ব দেয়ার অভিজ্ঞতা না থাকায় এই কমিটিকে সাবেক নেতারা অনেকেই ‘আনকোড়া নেতৃত্ব’ বলছেন।

আবার তারা অনেক জুনিয়র নেতা হওয়ায় অনেক সিনিয়র নেতা রাজনীতিতে আসতে পারছেন না। বিশেষ করে সাধারণ সম্পাদক জাকিরের চেয়ে অনেক সিনিয়রকে এখন তার পেছনে থাকতে হবে। দেখা গেছে, অনেক সিনিয়র নেতারা এখন রাজনীতি থেকে প্রায় ছিটকে পড়েছেন। অনেক হল সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও জাকিরের চেয়ে সিনিয়র। এ নিয়ে ক্ষোভ ঝরেছে অনেক নেতার মুখেই।
জানা গেছে, সোহাগ-জাকিরও সিনিয়রদের বাদ দিয়ে জুনিয়রদের নিয়েই কাজ চালাচ্ছেন। আগের নেতারা সিনিয়রদের নিয়ে ঘুরলেও এখনকার কমিটি জুনিয়রদের নিয়ে সবজায়গায় যাচ্ছেন। সিনিয়রদের তারাও কাছে টানছেন না।

এদিকে, প্রতিবার ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষিত হওয়ার সাথে সাথে সারাদেশে একটি উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করতো। এবার তা দেখা যাচ্ছেনা। নির্বাচিত নেতাদের এলাকা ছাড়া সারাদেশের অন্য জেলা শাখাগুলোতে সেভাবে কোন আনন্দ মিছিল ও করতে দেখা যায়নি।

এছাড়াও ছাত্ররাজনীতির আঁতুড়ঘর মধুর ক্যান্টিনেও নতুন নেতৃত্বের সেভাবে কোন কার্যক্রম দেখা যায়নি। নির্বাচনের পরের দিনের পর তারা আর ঢাবি ক্যাম্পাসেই আসেননি। ফলে নেতাকর্মীরা তাদের সেভাবে পাচ্ছেনও না। ঢাবি ক্যাম্পাসেও বিশাল বহরে কোনো মিছিল দেখা যায়নি ছাত্রলীগের।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More