ভাগ্যিস বিএনপি-জামায়াত-শিবির… ছিলো!

0

MIna farahদেবতার তুষ্টিতে এতো সস্তায় এতো মাংস পেতে ২০ দলের বিকল্প নেই বলেই, লাইফ সাপোর্টে। তারপরেও আওয়ামী লীগ বাঁচিয়ে রেখেছে নিজেদেরই প্রয়োজনে। দেবতার তুষ্টি বলে কথা! ভলতেয়ারের বিখ্যাত উক্তির সবচে’ সহজ ব্যাখ্যা, মেগাউন্নতি করতে, প্রত্যেকদিন সকালেই, বিরোধি শিবিরের মাথার উপর একটি করে এটমবোমা ফেলার প্রয়োজন নেই। ২০২১-২০৪১ রূপকল্পের জন্য, কারাগাড়গুলোকে ধারনক্ষমতার বাইরে নেয়ার প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশকে কলংকমুক্ত করতে সন্দেহাতীত বিচার ছাড়াই ফাঁসির প্রয়োজন নেই। এ্যাটম বোমার প্রয়োজন তখনই, যখন হিরোশিমা-নাগাসাকির পরিসি’তির সৃষ্টি হয়। কিন্তু আমাদের টেলিভিশনের স্ক্রলে কিংবা বিদেশি পত্রিকার সম্পাদকীয় পড়লে মনে হবে, প্রত্যেকদিনই দেশে বিশ্বযুদ্ধ চলছে। সকাল-বিকাল প্রোপাগান্ডা মেশিনের কাজই হচ্ছে, গুজব ছড়ানোর বিশ্বরেকর্ড। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ না দেখলেও ক্লাস এইটে পড়েছি। হাজারে হাজারে গ্রেফতার করে হাওয়া করে দিতো নাৎসী জার্মানী। পরবর্তীতে পাওয়া যেতো গণকবর কিংবা গ্যাস চেম্বারে। তবে ৭১ বছর পর, প্রত্যেকদিন সকালেই যদি একটি করে বোমা আর বন্দুযুদ্ধ করলে সন্ত্রাস কমতো, ৭৫এর ওই দৃশ্য দেখতে হতো কি? সন্ত্রাস মানেই ‘নাউন’ নয় বরং একটি বিশ্ববিদ্যালয়। যারাই ভুল করবে, বরং সন্ত্রাসীদের জন্য তাজমহল বানাবে। এমনকি মসজিদ ‘আলআকসা’তেও রোজা-রমজানের কর্মকান্ড চলছে নিয়মিত কিন্তু বিশ্বের ৪র্থ বৃহৎ মুসলিম দেশে একই মাসে ধর্মাঙ্গনে এবং বাইরে রোজাদারদের একি দৃশ্য! দেশের পত্রিকাতেই খবর, সেহেরি খাওয়ার সময় হাতকড়া, মসজিদে ঢুকে গ্রেফতার।[ads1]

যুদ্ধে যাওয়ার জন্য কংগ্রেসের অনুমতি লাগলেও রঙ হেডেড জর্জ বুশ বরং জাতিসংঘে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে, রেজ্যুলেশন পাশ করিয়ে, মধ্যপ্রাচ্যকে এমন লন্ডভন্ড করলো, তালেবান শেষে, এখন ইসলামিক স্টেটের যুগ। এখান থেকে কিছুই শেখেনি বাংলাদেশ। দিল্লির ওরা নিজেরাই রাজনৈতিক সন্ত্রাসের ঘাঁটি। নিজেদের রোগ ছড়িয়ে দিয়েছে এই দেশেও। এই কারণেই মধ্যপ্রাচ্যের মতোই এদেশেও অরাজক, হুলস্থূল। গৃহযুদ্ধ থেকে রক্ষা হয়নি ইরাক-সিরিয়ার। শিয়া-সুন্নির যুদ্ধ বাঁধিয়ে রেখে ক্রমাগত তেল-গ্যাস, লুটছে পুঁজিবাদিরা। গৃহযুদ্ধের ভয়াবহ পরিণতি সত্ত্বেও, সম্পদ লুটপাট কি থেমে আছে?
২০ দল যদি মনে করে স্লোভাকিয়ার সরকারই আপন, ১৪ দল যদি মনে করে দেশের চেয়ে বরং উজবেকিস্তানীদের স্বার্থই বড়… ৫০ বছর পরেও টকশোগুলোতে একই আলোচনা চলবে। প্রতিবছরই পুলিশের সংখ্যা এবং অস্ত্র ক্রয়, আরো বেশি কম্যুনিস্ট আকার ধারণ করবে। কারাবন্দিদের সংখ্যাও গিনিজবুকে যাবে। রক্তের রেকর্ড ভাঙ্গবে প্রতিটি ইউপি নির্বাচন। মটরসাইকেলে কয়জন বসবে, পুলিশের এতো বুদ্ধি সত্যিই হাস্যস্কর।[ads2]

তবে ১৭ কোটি মানুষের জন্য প্রয়োজন, সুস্থ সরকার। সমাজতন্ত্র নয় বরং ৭১ ছিলো গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ। অবশ্যই রাওয়াপিন্ডির কোর্ট থেকে দিল্লির কোর্টে যাওয়ার জন্য নয়। দিল্লি-ঢাকার উচিত, বুশ-ব্লেয়ার যুগলবন্দি বাদ দিয়ে বাংলাদেশকে গৃহযুদ্ধ থেকে রক্ষা করা। মূলত দিল্লির কারণেই দিনরাত বিশ্বযুদ্ধের উত্তাপ। “মেগাউন্নতির খেসারত দিতে, গৃহযুদ্ধ অসম্ভব নয়।” সাম্রাজ্যবাদিদের লুটপাট আড়াল করতেই, কয়দিন পরপর সাঁড়াশি অভিযান আর গণহত্যা। তবে উজবেকিস্তানকে কোলে বসানোর বদলে, সব দলকে আমলে নিয়ে দ্রুত নির্বাচনই একমাত্র সমাধান। সুতরাং ধানাইপানাই বাদ দিয়ে সবাইকে এক এ্যাসেম্বলি, এক ছাদের তলে বসতে হবে। অন্যথায়, ৭৫এর মতো ‘সমাজতন্ত্রকে’ বৈধ ঘোষণা করা হোক।


উপমহাদেশের ডিজিটাল শয়তানের নাম- এরশাদ। দিল্লির মানবতাবিরোধিরাই ওকে ১০ম সংসদে বসিয়ে তখন থেকেই দুইবাংলাকে এক করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। (দ্রঃ ইউটিউবে আলজাজিরাকে রামমাধবের সাক্ষাতকারে দুইবাংলাকে এক করার মন্তব্য)। যে রাস্তায় রিকসা চলে না, সেখানেও ভারতের হেভী ট্রাক? ব্রিটিশের পর মূলত দিল্লির উপনিবেশবাদের কারণেই, বাংলাদেশ প্রায় ১০০ বছর পিছিয়েছে। যে আওয়ামী লীগকে মানুষ চিনতো, ফ্যাসিবাদি কর্মকান্ডের প্রয়োজন আদৌ কি তাদের? নাকি বর্হিশক্তির চাপ কুলোতে না পেরে, ২০২১-২০৪১ রূপকল্পের কাছে আত্মসমর্পণ? আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র উপলব্ধি করার জন্য বুদ্ধিবৃত্তির চর্চা খুব বেশি প্রয়োজন। বাংলাদেশ সিকিম হলে, কার লাভ![ads1]

ষড়যন্ত্রকারীরা যেভাবে ‘সিঙ্গাপুর’ বানানোর নামে মেগাউন্নতির আফিম ছুড়ে দিয়েছে, এরাই সাম্রাজ্যবাদিদের সঙ্গে আঁতাত করে বিরোধি শিবিরকে ধ্বংস করছে। আর এখন লাইফ সাপোর্টে ধুকে ধুকে মরছে মির্জা ফকরুলরা। কথায় কথায় ফকরুলদের লেজে আগুন আর খালেদার শরীরে মানুষ পোড়া গন্ধ। আফিমের তেজ এতোই বেশি, আম না কাঁঠাল, চেনার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে ১৪ দল। যে দেশের হার্ট এ্যাটাকের রোগি রিকসায় চড়ে হাসপাতালে যায়, মেট্রোরেল-১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল, কাদের স্বার্থে? হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়ে অধিকাংশই নিজের দেশে খাটাচ্ছে সাম্রাজ্যবাদিরা। আর ঋণের জালে একদিন ডুবে মরবে বাংলাদেশ। প্রতিবাদ করলেই বন্দুকযুদ্ধ আর ডিমথেরাপি। রাজনৈতিক ভারসাম্যহীনতার সুযোগে ঢুকে পড়ছে আইএস। হয়তো সাময়িক বিরতি হবে কিন্তু তারাও নিজের মতো হিসেব করেই এগোয়।
যেকোন অপরাধ প্রমাণ করতে, প্রমাণ লাগে। তবে সব প্রথা পাল্টে ফেলতে চায়, আওয়ামী লীগ। গোয়েলবসের আশ্চর্য আবিষ্কার, ৭ বার বললেই মিথ্যাকে সত্য বানানো যায়। বিশ্বের কাছে সেভাবেই লবি করছে, ২০ দল হচ্ছে বাংলাদেশের একমাত্র সন্ত্রাস। আফগান না হতে চাইলে, একমাত্র বিকল্প আওয়ামী লীগ। তবে রমজান মাসে গ্রেফতারের খবরে কিন্তু বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে বিদেশি মিডিয়া।

নিজেদের ভুলে বৈশ্বিক সন্ত্রাসের শিকার ১৪ দল। মধ্যপ্রাচ্য ছেড়ে দুর্বল দেশে ঘাঁটি খুঁজছে ইসলামিক স্টেট। আইসল মোকাবেলায় সামরিক জোট পাকাচ্ছে পরাশক্তিরা। নানান শর্তের বেড়াজালে ছোট দেশগুলোকে সামরিক জোটের আওতায় আনছে। আমদানী করা সৈন্যগুলো যুদ্ধ করছে নানান দেশে। এজন্য মোটাদাগে পুরষ্কারও পাচ্ছে। বাংলাদেশের সঙ্গে সৌদির সামরিক জোটের বিষয়টি আলোচনায় নেই কেন? যতো না মক্কা-মদিনা পাহারা, বহুগুণে সৈন্য যাবে ইয়েমেন্তলিবিয়ায়। আইএস সেটাকে কি চোখে দেখবে? ইতোমধ্যে তারা সৌদি বাদশাকে উচ্ছেদের হুমকি দিয়েছে। ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে সৌদির যুদ্ধ অজানা নয়। মোদি সরকারকেও ক্ষমতাচ্যুত করতে হুমকি দিয়েছে আইসল। সৌদির অস্ত্রে প্রায় ৬০ ভাগ ইয়েমিনি শিশু হত্যার বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘে ভোটাভুটি হলে, কালো তালিকা থেকে রক্ষার ৩টি ভোটের একটি ভোট বাংলাদেশের। বিশ্বনেত্রীর বিশ্বায়নের ঢোল যারাই পেটাচ্ছে, ভয়ংকর তথ্যগুলো তাদের জন্য দিলাম। জনগণকে অন্ধকারে রেখে এভাবে একটার পর একটা চুক্তি করতে থাকলে, ভবিষ্যত অন্ধকার। সুতরাং বিএনপি-জামায়েত না থাকলে, উঠতে-বসতে মানুষ পোড়ানোর দায় চাপাতো কার ঘাড়ে! তবে আসল সন্ত্রাসীদের খবর দিচ্ছে মিডিয়া। আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগকে বাদ দিয়ে উল্টা ২০ দলের বিরুদ্ধে মানুষ পোড়ানোর ব্যাখ্যা এইরকম, “বৃহস্পতিতে ভূমিকম্প হলেও দায়ী খালেদা জিয়া।”[ads2]


লেখার শিরোনামটি হলো, ভাগ্যিস বিএনপি-জামায়েত-শিবির ছিলো! এর ব্যাখ্যা হলো, ২০ দল না থাকলে এতো সস্তায়, এতো রাজনৈতিক মাংস, কোথাও পেতো না। বিপুল সংখ্যক আওয়ামী ভাইবোনেরা বেকার হলে ভয়ংকর অবস্থা হতো। ২০ দল না থাকলে, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের দায় চাপাতো কার ঘাড়ে! ৫ জানুয়ারির জন্য দায়ী করতো কাকে! ২০৪১ পর্যন্ত গদিতে থাকতে, কার বিরুদ্ধে হামলা-মামলা চালাতো! সাম্রাজ্যবাদিদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার অপরাধে কাকে পিষতো স্টিমরোলারে?

কাজীর গরু খাতায় আছে গোয়ালে নেই। গীতা সরকারের ঐতিহাসিক বক্তব্যের পরেও ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বন্ধ হয়নি। ভোট কেন্দ্রে আওয়ামী নাৎসীদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক প্রতিবাদের বিরুদ্ধে অস্ত্রের ব্যবহার বরং বেড়েছে। ৫ জানুয়ারি থেকে ইউপি নির্বাচন পর্যন্ত যতো আওয়ামী সন্ত্রাস, মানুষ পোড়ানোর সকল দায় ২০ দলের? রাষ্ট্রদূতেরা প্রতিদিনই দেখছে আসল সন্ত্রাসী কারা। তারা চাইলে নৈরাজ্য ঠেকাদে পারতো না, পাগলেও বিশ্বাস করবে না। অথচ আমাদের ৯ হাজার সৈন্য দিয়ে অন্য দেশের শান্তিরক্ষা করছে পশ্চিমারা। আফ্রিকা-মধ্যপ্রাচ্যের মতো অসি’রতা জিইয়ে রাখলে সাম্রাজ্যবাদিদের লাভ। সবচে’ বড় সাম্রাজ্যবাদি শক্তি ভারত। তেল-গ্যাস আর বঙ্গোপসাগরের সম্পদ লুটতে শকুনের উপদ্রব ক্রমশই বাড়ছে। বৈধ নির্বাচনের জন্য চাপ দেওয়ার ক্ষমতা যাদের, সম্পদের কাছে তারাই অসহায়। তেল-গ্যাসের খনির ভান্ড গণভবনের হাতে। ব্লক ইজারা পেতে শকুনদের দীর্ঘ লাইন। সুতরাং আগামী ৫০ বছরের নির্বাচনী সন্ত্রাস নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ সৃষ্টি হয়েছে। সুবিধাবাদিরাই বরং অশ্বডিম্ব নির্বাচন এবং ট্রাইব্যুনাল দুটোই চালু রেখে, দৃষ্টি ভিন্নখাতে সরাচ্ছে। রকিবউদ্দিনের টিকে থাকাটা, সাম্রাজ্যবাদের অংশ। রকিবউদ্দিনের পদত্যাগ কিংবা বরখাস্ত কোনটাই আমাদের হাতে নেই।[ads2]


নিজেদের সন্ত্রাসের প্রমাণ এতো বেশি যে, খালেদার বিরুদ্ধে মানুষ পোড়ানোর অভিযোগ অত্যন্ত হাস্যস্কর। আওয়ামী লীগ নিজেও জানে। ৩০৩ দিন হরতাল আর ২৮ অক্টোবর ২০০৬ সনে মানুষ পোড়ানোর খবরগুলো এখন পর্যন্ত মিডিয়ায়। মতিঝিলে গানপাউডার ছিটিয়ে গণহত্যার খবর ইউটিউবে। মার্চ ফর ডেমোক্রেসির দিন নাৎসীবাহিনীর আচরণের দৃশ্যগুলোও মিডিয়ায়। উল্টা খালেদা জিয়ারই মানুষ পোড়ানোর অভিযোগ তোলার কথা।
গণভবনের ডেইলি অভিযোগের তালিকার শীর্ষে, উন্নতির পথে নাকি বাঁধার সৃষ্টি করছে বিরোধিদল। আমরা হাসবো, নাকি কাঁদবো! তবে উন্নতির ভাঙ্গা রাস্তা আড়াল করতেই প্রত্যেকদিন বন্দুকযুদ্ধে মানুষ খুন করছে আওয়ামী লীগ। এজন্য কার পরিতাপ, কার প্রশ্ন? কিভাবে বাঁধা হলো বিরোধিদল? যাদের রাস্তায় দাঁড়ানোর অধিকারটুকু কেড়ে নিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিটি অভিযোগই ষড়যন্ত্র। মির্জা ফকরুলের বিরুদ্ধে গার্বেজ ট্রাকে আগুন দেয়ার অভিযোগ একমাত্র এই দেশেই সম্ভব। সুনীল গাঙ্গুলির ভাষায়, বাংলাদেশ আর কখনো বড় হবে না।

রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের আরেক মূর্তি- ট্রাইব্যুনাল। প্রতিটি রায়ের পরেই ব্রাড এডামন্সদের রুটিন চিঠি। গণভবনের পাল্টা হুমকিও রুটিন। এইসবই আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ না হলে, একটি টার্গেট কিলিংও কেন ঠেকাতে পারলো না ‘আইসিসি’? ট্রাইব্যুনাল কি আইনের অনুস্বাক্ষরকারী নয়? তবে জুডিশিয়াল কিলিংয়ের প্রতিবাদে মিছিল হলেই সন্ত্রাস এবং মানুষ পোড়ানোর অভিযোগগুলো কি আমাদের? সন্ত্রাসের সংজ্ঞা কী? কাজীর গরু খাতায় আছে গোয়ালে নেই। সাঁড়াশি অভিযান পরবর্তী মানবজমিন ১৪ জুন, কারগাড়গুলোর ধারণ ক্ষমতার চেয়ে ৪০ হাজার বেশি বন্দি। সর্বত্রই মানবেতর অবস্থা। মেগাউন্নতির প্রোপাগান্ডা দিয়ে কি মানবতাবিরোধি কর্মকান্ড ঢাকা যাবে?


“আমেরিকাতেও টার্গেট কিলিং হয়, বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে ঘুমাচ্ছে,” স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যকে হালকা তামাশাই মনে করি। আমেরিকার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবে একমাত্র শিশুরাই। তবে, নিঃসন্দেহে অতীতের সকল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার কাছে পরাজিত।
“ক্রিয়া থাকলে প্রতিক্রিয়াও থাকবে” গণভবনের এই হুশিয়ারিতেই সব প্রশ্নের উত্তর। তবে প্রতিটি প্রেসকনফারেন্সের পুঁজি ২০ দল। সাংবাদিক সম্মেলন যখন ব্যক্তিপুঁজা, হাত কচলানো সাংবাদিকদের কলাগাছের মতো নুইয়ে পড়ার দৃশ্য, বিনা পয়সায় বিনোদন। কিন্তু যে বিষয়টি উদ্বেগজনক, সাংবাদিকতা হয়তো ত্যাগ করেছে সাংবাদিকদেরকে। প্রেসকনফারেন্স পরিণত হয়েছে বিনা পয়সায় বিনোদনের জায়গায়।[ads1]

“আমি হেড অব দ্যা গর্ভাণমেন্ট, আমার কাছে নিশ্চয়ই সব তথ্য আছে।” পরদিন দলীয় কার্যালয়ে, “গুপ্তহত্যাকারীদের খুঁজে খুঁজে বের করবো।” বক্তব্য দুটিই সাংঘর্ষিক এবং স্ববিরোধি। বিতর্ক করতেই পারি, বিডিআর থেকে আজব্দি যতো গুম-খুন, তথ্য হাতে সত্ত্বেও খুনিদেরকে কেন বিচারের আওতায় আনা হয়নি? এখন গণভবণের দায়িত্ব সাগর-রুনি, ইলিয়াস আলী, আমিনুল ইসলাম… পরিবারগুলো স্বস্তি দেয়া। আবার বললো, বিএনপি-জামায়েতই নাকি গুপ্তহত্যার জন্য দায়ী। হয় আমরা নির্বুদ্ধি, নয় কেউ মিথ্যা বলছে। হেড অব দ্যা গভার্ণমেন্টের ওই দাবি সত্য হলে, সাঁড়াশি অভিযান বন্ধ করে এখনই সব তথ্য আদালতকে দিতে হবে। এতে করে হাজার হাজার গুম-খুনের মিমাংসা হবে। রমজান মাসে হয়রানির প্রয়োজনও কমবে।
গণভবণের ওই একটি বক্তব্যেই হাজার হাজার গুম-খুনের উত্তর। অর্থাৎ গুপ্তহত্যা করেই ২০৪১ পেরিয়ে ক্ষমতায় থাকবে। ওদেরকে বেশি প্রয়োজন দিল্লির। অনেকের মতো আমিও ৭২ থেকে ৭৫এর প্রত্যক্ষদশী। ৪০ বছর পরেও ঝাল আরো বেড়েছে। বুশ-ব্লেয়ারের প্রেতাত্মাদের কাছে ধরা খেয়েছে বাংলাদেশ।
টকশোর বিশ্লেষকরা হামেশাই বিদেশি ঘটনাবলির তুলনা দেয়, কিন্তু একবারও বলে না, ৭৪-৭৫এর প্রেক্ষাপট কি! পার্লামেন্ট বিলুপ্ত করে সমাজতন্ত্র আনলো কেন! সব দল বিলুপ্ত করে, বাকশালের প্রয়োজন কেন! তখনও বাধ্য হয়ে আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে গিয়েছিলো অনেক মুক্তিযোদ্ধা। এরাই জাসদ-সর্বহারা-গণবাহিনী। পার্লামেন্টে মুজিবের হুশিয়ারি- “কোথায় সিরাজ শিকদার।”


শয়তানের ঘাঁটি ভারতীয় হাইকমিশন আবারো বললো, “নিশ্চয়ই শক্তহাতে সন্ত্রাস দমন করবেন শেখ হাসিনা।” বুশ-ব্লেয়ার যুগলবন্দির প্রেতাত্মারা ভুলেই গিয়েছে, এটি স্বাধীন রাষ্ট্র এবং একদলকে পৃষ্ঠপোষকতা করলে অন্য দল ক্ষিপ্ত হবে। এই কথাটি যদি ওয়াশিংটন বলতো লোকসভাকে, কি ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখাতো ভারতীয়রা? পঙ্কজ শরণ আর সুজাতা সিংরা কিন্তু এই কাজটি করেই, বাংলাদেশকে অচল করে দিলো। সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে, সাঁড়াশি অভিযান যেন কম্যুনিস্ট দেশের চেয়ে জঘন্য দৃষ্টান্ত। ৫ জানুয়ারির জন্য হাসিনাকে বেছে নিয়ে খালেদাকে আস্তকুড়ে ফেলেছিলো ওরাই। রওশনকে সংসদে পাঠিয়েছিলো কংগ্রেস। পরবর্তীতে যুদ্ধবাজ মোদি এসে পরিসি’তিকে অধিক উত্তপ্ত করলো। ভারতীয় হাইকমিশনের এই বক্তব্যের পরে, হয়তো বিরোধি শিবিরে আরো ব্যাপক হত্যাকান্ড চালাবে। ওরা ধুতি, নেংটি দুটোই ফেলে দিয়েছে। আগামী নির্বাচনের আগে ২০ দলের অস্তিত্বও থাকবে কিনা![ads2]

তবে যা চাঞ্চল্যকর। রোজা-রমজানের মাসে সাঁড়াশি অভিযান না চালালেও পারতো। কিছু কিছু বিষয় একেবারেই ফেলে দেয়া যাবে না। এই অভিযান আসলেই চালাচ্ছে কারা? যখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীরা গণইফতারের আয়োজন করছে, এই দেশে চলছে গণগ্রেফতার। জায়নদের সঙ্গে পার্থক্য কোথায়! অথচ যারাই বিরোধিদলের বিরুদ্ধে ইহুদিদের সঙ্গে হাত মেলানের অভিযোগে কারাগাড় ভরে ফেলছে, নিজেদের ‘জায়ন’ আচরণ লুকোবে কি দিয়ে! “এমনকি ফিলিস্তিনিরাও বহুদিন এইধরনের অভিযান দেখেনি।” এমনকি ইস্রায়েল-ফিলিস্তিনিরাও মাঝে মাঝেই শান্তি চুক্তিতে বসে। যুদ্ধ বিরতিও নেয়। অন্যদের পরামর্শকে উড়িয়ে দেয় না, বরং শর্তসাপেক্ষে সংর্ঘষ বন্ধ রাখে। কিন্তু ৯ বছরে কয়টা শান্তি আলোচনার দৃষ্টান্ত রেখেছে গণভবন?
২০১৩ সনের ওই ১টি ফোন কল, আর কয় বছর ভাঙ্গিয়ে খাবে আওয়ামী লীগ? মনে হচ্ছে ২০৪১ সন পর্যন্ত ওই অজুহাতই চলবে। নিঃসন্দেহে বিষয়টি দুর্বিষহ। যেন ওই একটি ফোন কলের বাইরে বিধাতার আর কোন বিধান নেই। যেন ওই ১টি ফোনকলের পর, কেয়ামত পর্যন্ত আর কোন ফোন করা নিষেধ। অন্যথায় কেয়ামত অবধারিত। বেদবাক্যের চেয়েও কঠিন এ বিধান। যেন আলোচনার টেবিল প্রত্যাহার করে নিয়েছে অদৃশ্য কেউ। আমরা হয় গাধা নয় গরু।

আলোচনার তাগিদ দিলেই ওই ফোন কলটির রেফারেন্স টানে। খালেদা জিয়া হামেশাই আলোচনার তাগিদ দিলেও গণভবনের বডিল্যাঙ্গুয়েজই আলাদা। বিধাতার নিয়মেরও ব্যতিক্রম আছে, আওয়ামী লীগের কথা শুনলে মনে হয়, বিধাতাও ম্লান। ২০৪১ সনের পরেও ২০ দল নির্বাচনে আসতে পারবে কিনা, সন্দেহ আছে। সুতরাং ফোন কলের নখড়া পাবলিক জানে। অন্যথায় আবারো আন্ডারগ্রাউন্ডের পরিসি’তি সৃষ্টি হলে দায়ী থাকবে আওয়ামী লীগ। তখন প্রায় ৬০ হাজার পাল্টাপাল্টি খুন। এখন কতো, সময় বলবে। তবে মনে রাখতে হবে, উপসেনাপ্রধানকে পাশে রেখে, অরোরার কাছেই আত্মসমর্পণ করেছিলো নিয়াজি। যারাই সিকিম নিয়ে প্রশ্ন করে, কিছু কিছু বিষয় নিজেদেরকেই বুঝতে হবে।
অতীতের পুনরাবৃত্তি হলে, সবচে’ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সংখ্যালঘুরা। রক্ষিবাহিনীর তান্ডবে লক্ষ লক্ষ সংখ্যালঘু দেশত্যাগ করেছিলো। পুরোহিতরা কয়টার মধ্যে পুঁজা শেষ করে বাড়ি ফিরবে কিংবা মোদি এসে সংখ্যালঘুদেরকে রক্ষা করবে কিনা, উদ্ভট চিন্তা বাদ দিয়ে, আওয়ামী লীগের কাছেই জবাব চাইতে হবে। জ্বরের কারণ ক্যান্সার হলে, কোরামিনে সারবে না।
ওদের ভাগ্য ভালো, কাজীর গরু গোয়ালে না থাকলেও খাতায় আছে। তবে যুগে যুগে যারাই উপনিবেশবাদিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে, সন্ত্রাসী নয় বরং তারাই প্রকৃত দেশপ্রেমিক।[ads1]

– মিনা ফারাহ।
ইমেইল: farahmina@gmail.com

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More