বরগুনার জিসানের প্রাইভেট কার ১ লিটারে চলবে ১৪৫ কিলোমিটার!

0

bargunaবরিশাল টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে অটোমোবাইল বিষয়ে এইচএসসি কোর্স সম্পন্ন করা জিসান জ্বালানি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব মোটরযান উদ্ভাবন করে দেশজুড়ে খ্যাতি অর্জন করেছেন। জিসান হাওলাদারের উদ্ভাবিত জ্বালানি সাশ্রয়ী দুটি মোটরযান বেশ কিছুদিন আগে জাতীয় কার্ড ডিজাইন অ্যান্ড ফুয়েল এফিসিয়েন্ট কম্পিটিশনে দুটি ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। জাপানের সাহায্য সংস্থা জাইকার উদ্যোগে নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আয়োজিত মেলায় বুয়েট, রুয়েট, এমআইএসটি, আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রথম সারির কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত মোটরযান এ মেলায় প্রদর্শন করা হয়।[ads1]

মেলায় তার উদ্ভাবিত পরিবেশবান্ধব ও জ্বালানি সাশ্রয়ী প্রথম মোটরযান এক লিটার পেট্রলে ১৪৫ কিলোমিটার এবং দ্বিতীয়টি ১৪০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে। প্রতিযোগিতার চার ক্যাটাগরিতে জিসানের উদ্ভাবিত চার চাকার মোটরযানটি সর্বোপরি চ্যাম্পিয়ন হয়। তিন চাকার অপর যানটি সবচেয়ে কম জ্বালানি ব্যবহার করে বেশি পথ অতিক্রম করায় সেটিও প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়। মেলায় তৃতীয় হয়েছে রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের রুয়েট-১ দলনেতা তরুণ উদ্ভাবক চন্দনের তৈরি চার চাকার মোটরযান। ওই মোটরযান এক লিটার পেট্রলে ৯৬ কিলোমিটার অতিক্রম করে। ৮৬ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের দল এম. জিনিয়াস দলনেতা সাব্বির আহমেদের উদ্ভাবিত তিন চাকার মোটরযান প্রতিযোগিতায় চতুর্থ স্থান অধিকার করে। বুয়েট ও এমআইএসটির শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত মোটরযান প্রতিযোগিতা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বাদ পড়ে যায়।

বাংলাদেশ মডেল ইয়ুথ পার্লামেন্টের চেয়ারম্যান ফিরোজ মোস্তফা জানান, জাতীয় বিজ্ঞান মেলায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অধিকার করা জিসানের মোটরযান দুটি ঢাকায় জাইকা আয়োজিত মেলায় অংশ নেবে। জিসানকে ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া ছাড়াও মোটরযানের কারিগরি উন্নতির গবেষণার জন্য সব অর্থ জাইকা সহায়তা দেবে বলে তিনি জানান। বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার বাসিন্দা মো. আবুল হোসেন হাওলাদারের ছেলে জিসান হাওলাদার ২০১১ সালে প্রাইভেট কার আকৃতির মোটরযান উদ্ভাবন করেন। মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনচালিত ১২০ সিসি মোটরযানের চেসিস তৈরি করা হয়েছে এসএস পাইপ দিয়ে। এ ছাড়া মূল বডিতে দেওয়া হয়েছে স্টিল শিট। ৬০ কিলোমিটার গতিসম্পন্ন মোটরযানে চালকসহ ছয়জন বসতে পারবেন। তবে আপাতত পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা মোটরযানে দেওয়া হয়েছে দুটি করে আসন। জিসানের উদ্ভাবিত মোটরযান জ্বালানি সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব। কোনো প্রকার উচ্চ শব্দ ছাড়াই মাত্র ১ লিটার পেট্রল বা অকটেনে ১২০ কিলোমিটার পথ চলতে পারবে। জিসান জানান, তার একটি মোটরযান তৈরি করতে চার মাস সময় লেগেছে। বরিশাল টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজেই ওই যানটি নির্মাণ করছেন তিনি। ২০১১ সালে তিনি তার উদ্ভাবিত মোটরযানটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করে সফল হন। একটি তৈরি করে সফলতা পাওয়ার পর প্রাইভেট কার প্রকৃতির আরও একটি মোটরযান উদ্ভাবনের কাজ শুরু করেন তিনি।[ads2]

দ্বিতীয়টি তৈরি করতে তার প্রায় ৪ মাস লেগেছে। তার উদ্ভাবিত মোটরযান দুটি ২০১১ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ইকোরা বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে। এ ছাড়া ২০১৩ সালে বরিশালে অনুষ্ঠিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান অধিকার করে তার উদ্ভাবিত মোটরযান। জিসান আরও জানান, সবশেষ তিনি আরও একটি মোটরযান তৈরি করেছেন। সব মিলিয়ে তার উদ্ভাবিত তিনটি মোটরযানের মধ্যে দুটি গত ১৮ ডিসেম্বর নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জাইকা আয়োজিত প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবনী নিয়ে প্রতিযোগিতা ও প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করে প্রথম এবং দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। জিসান বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে এক-একটি মোটরযান তৈরি করতে তার প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তিনটি মোটরযান তৈরিতে অর্থনৈতিক সহযোগিতা দিয়েছে জাইকা। তার উদ্ভাবিত প্রতিটি মোটরযান পূর্ণাঙ্গভাবে তৈরি এবং চালু করতে ইঞ্জিন, চেসিস এবং বডিসহ প্রায় ৮ লাখ টাকার প্রয়োজন। ক্ষুদে প্রকৌশলী জিসান হাওলাদার বলেন, তার উদ্ভাবিত মোটরযান বাজারজাত করা হলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধিশালী হতে পারে। তবে তার একার পক্ষে এত টাকা খরচ করে মোটরযান তৈরি করা সম্ভব নয়। তাই তার সরকারের সহযোগিতা এবং পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন।[ads2]

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More