এলপিজিতে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই

0

lgedআবাসিকে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলপিজি) ব্যবহারের পরামর্শ দিলেও সরকারের এলপিজির দাম নিয়ন্ত্রণের কোনো উদ্যোগ নেই, নেই কোনো নীতিমালা। মুখে সরবরাহ বাড়ানো কথা বললেও বাস্তবে কোনো উদ্যোগ নেই বললেই চলে।
বর্তমান সরকার ক্ষমতার আসার পর পরই আবাসিকের জন্য এলপিজি সরবরাহ বাড়ানো ও দাম নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা দিয়েছিল। অথচ এখন পর্যন্ত এলপিজির দাম নিয়ন্ত্রণের কোনো উদ্যোগ নেই সরকারে। ইচ্ছামতো দামে বেসরকারি কোম্পানিগুলো এলপিজি বিক্রি করে। অনেক ভুঁইফোঁড় কোম্পানি সিলিন্ডর তৈরি করছে। এতে প্রায়ই সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে।
সরকারিভাবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) কোম্পানিগুলো এলপিজি সরবরাহ করে। বেসরকারিভাবে বসুন্ধরা এলপিজি, পেট্রিগ্যাজ, যমুনা, টোটাল গ্যাস, অরিয়ন এবং বাংলাদেশ অক্সিজেন কোম্পানি (বিওসি)সহ মোট ৪৪টি কোম্পানি বাজারে এলপিজি সরবরাহ করে। এছাড়া আরো প্রায় একশ’ কোম্পানিকে এলপিজি সরবরাহের লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। দেশে বর্তমানে বছরে প্রায় তিন লাখ মেট্রিকটন বোতল গ্যাস প্রয়োজন হয়। কিন্তু সরবরাহ করা হচ্ছে গড়ে প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ হাজার মেট্রিকটন। এর মধ্যে সরকারিভাবে মাত্র ২০ থেকে ২২ হাজার টন। বেসরকারিভাবে প্রতি বছর ৫০ থেকে ৬০ হাজার টন এলপি গ্যাস বাজারজাত করা হয়।
এলপি গ্যাস আমদানিতে বর্তমানে ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক, ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং চার দশমিক পাঁচ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি দিতে হয়। এখন পাঁচ হাজারের নিচের এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের জন্য নতুন করে রেগুলেটরি ডিউটি দিতে হবে। সরকারি এলপিজি সাড়ে ১২ কেজি ওজনের প্রতি বোতল ৭০০ টাকায় বিক্রি করার কথা। সারাদেশেই এই এক দামে বিক্রিমূল্য ঠিক করেছে বিপিসি। কিন্তু সে দামে কোথাও বিক্রি হয় না। প্রায় দ্বিগুণ দামে এলপিজি বিক্রি হয় বাজারে। বেসরকারি এলপিজির সিলিন্ডারের দাম এক হাজার ৪০০ টাকা। কিন্তিু বিক্রি হয় আরো বেশি দামে।
পাইপলাইনের গ্যাস ব্যবহারকারী এক গ্রাহক এক মাসে দিচ্ছেন মাত্র ৮০০ টাকা। অন্যদিকে এলপিজি ব্যবহারকারীরা গ্যাস কম ব্যবহার করলেও তাদের দিতে হচ্ছে দ্বিগুণেরও বেশি টাকা।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আবাসিক খাতে গ্যাসের সমস্যা থাকবেই। এটি আগেও বলা হয়েছে। যারা আবাসিকে পাইপলাইনের গ্যাস ব্যবহার করছেন কিংবা যারা ব্যবহার করছেন না, তাদের ধীরে ধীরে এলপিজি ব্যবহার শুরু করতেই হবে। দাম নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে এলপিজির ব্যাপক চাহিদা। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ করা যাচ্ছে না। তাই সরকার এখনই এলপিজির দাম নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে না। বেসরকারিভাবে এলপিজি সরবরাহ বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। সরকারিভাবেও এলপিজি আমদানির চিন্তা করা হচ্ছে। সরকারিভাবে এলপিজি আমদানি শুরু করা গেলে বেসরকারিভাবে যারা আমদানি করছেন তাদের সঙ্গে সরকারি কোম্পানির প্রতিযোগিতা তৈরি হবে। এক্ষেত্রে দাম নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে।
বিপিসির চেয়ারম্যান এএম বদরুদ্দোজা বলেন, সরকারিভাবে এলপিজি বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরবরাহ সরকারিভাবে আরো বাড়লে দাম কিছুটা কমে যাবে। তিনি বলেন, বেসরকারিভাবে যারা এলপিজি বিক্রি করে তারা বিপিসির কাছ থেকে লাইসেন্স নিলেও কত দামে বিক্রি করবে তা নিয়ন্ত্রণের সুযোগ নেই।
এলপিজি আমদানি করা একটি বেসরকারি কোম্পানির এক কর্মকর্তা জানান, এলপিজি সিলিন্ডার আমদানির ক্ষেত্রে কর তুলে নিলে গ্যাসের দাম কমানো সম্ভব হতো। দাম সহনীয় রাখতে শুল্ক কমানো উচিত। তিনি বলেন, এলপিজির অনেক চাহিদা আছে। কিন্তু কর না তুলে দিয়ে দাম কমানো যাবে না আর দাম কমানো না গেলে ব্যাপকভাবে এই ব্যবসা করাও সম্ভব নয়।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More