বছরে সাত লাখ টন চাল নষ্ট করে সৌদিরা

0

photo-1451986139সৌদি আরবে প্রতিবছর গড়ে সাত লাখ টন চাল নষ্ট হয়। দেশটির বর্তমান বাজারমূল্যে এর দাম ২০০ কোটি রিয়াল। এটি টাকায় হিসাব করলে দাঁড়ায় চার হাজার ২০০ কোটি টাকা। এ পরিমাণ চাল নষ্ট না হলে দেশটি অর্থনীতির ঘাটতি মেটাতে বড় ভূমিকা রাখতে পারত বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

আজ মঙ্গলবার আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন ভোজ, উৎসব উদযাপন ও সামাজিক অনুষ্ঠানের অতিথিদের জন্য দেওয়া খাদ্যের ৪০ শতাংশই নষ্ট হয়ে যায়।

পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে চালের সবচেয়ে বড় ভোক্তা সৌদি আরব। দেশটির খাদ্য চাহিদা মেটাতে বছরে ১৪ লাখ টন চাল লাগে। এর দাম ৫০০ কোটি রিয়াল (এক রিয়াল = ২১ টাকা)।

সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি চাল রপ্তানি করে ভারত। দেশটিতে মোট আমদানির ৬৮ শতাংশ চাল ভারত থেকে আসে। চলতি বছর সৌদি আরবে চালের দাম ৫ শতাংশ বেড়েছে। তবে গত বছরজুড়ে ভারতে চালের দাম কমেছে।

সৌদি ভোক্তা রক্ষা সমিতির (সিপিএ) চেয়ারম্যান নাছার আল-তুয়াইম মনে করেন, চালের দাম বাড়ার পেছনে বিভিন্ন মহলের হাত রয়েছে।

নাছার বলেন, ‘অসাধু ব্যবসায়ী, বেহিসাবি ভোক্তা, মজুদদার ও কিছু আমদানিকারকের কারণে চালের দাম বাড়ছে।’

ব্যাপক হারে খাদ্য নষ্ট হওয়ায় সৌদি অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে মনে করেন দেশটির অর্থনীতিবিদ ওসামা ফিলালি। তিনি বলেন, ‘যারা কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, খাদ্য নষ্টের জন্য তাদের জবাবদিহি করা হচ্ছে না। ফলে অনেকেই কোনো ধরনের হিসাব-নিকাশ ছাড়াই খাদ্যের আয়োজন করে।’

তরুণ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাসমা-এর প্রধান হাসান আহমাদ বলেন, ‘খাদ্যের অপচয় ঠেকাতে আমরা একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছি। বিশেষ করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বেচে যাওয়া খাদ্য ফেলে না দিয়ে গরিবদের দিতে আমরা কাজ করছি। যেখানেই কোনো ভোজ হচ্ছে, সেখানে গিয়ে আমরা খাদ্য সংগ্রহ করে নিয়ে আসি।’

অর্থনীতিবিদ ফারুক আল-খতিব বলেন, ‘ভোক্তার কারণেই সৌদিতে চালের চাহিদা বেশি। এটি একটি সাধারণ ব্যাপার যে যখন চাহিদা বাড়বে, তখন পণ্যের দাম বাড়বে। নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়নোর মাধ্যমেই কেবল চালের চাহিদা কমানো যাবে।’

জেদ্দাহ মিউনিসিপ্যালিটির (পৌরসভা) মুখপাত্র মোহাম্মাদ আল-বুগামি বলেন, ‘প্রতিদিন ছয় হাজার টন খাদ্য আবর্জনার স্তূপে ফেলা হচ্ছে।’

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে নয়জন ব্যক্তির একজন পর্যাপ্ত খাদ্য খেতে পারে না।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More