শিক্ষকদের লাগাতার কর্মবিরতির দ্বিতীয় দিন আজ (মঙ্গলবার) ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অচল রয়েছে। শ্রেণিকক্ষে ঝুলছে তালা। বন্ধ রয়েছে সব ক্লাস ও পরীক্ষা। শিক্ষকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কঠোর হুঁশিয়ারির পরেও তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যেতে অনড় রয়েছেন। ফলে দীর্ঘ সেশন জটের আশঙ্কায় রয়েছে শিক্ষার্থীরা।
অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামোতে পদমর্যাদা অবনমন ও বেতনবৈষম্য নিরসনের দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের ডাকে গতকাল (সোমবার) থেকে ৩৭টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন। কর্মসূচির প্রথম দিনেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্থবিরতা নেমে আসে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টার ফাইনাল বা কোর্স ফাইনাল পরীক্ষা নেয়া হলেও বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়েই ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভাগীয় অফিস খোলা হলেও ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম ছিল। গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোর অনেক কক্ষই তালাবদ্ধ ছিল।
কর্মবিরতির দ্বিতীয় দিনেও একই চিত্র বিরাজ করছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুরে হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৩৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে।
শিক্ষকদের দাবি পূরণে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ উপায় খুঁজছেন দাবি করলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। বরং বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে সোমবার বিকেলে রজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় শিক্ষকদের আন্দোলনের কঠোর সমালোচনা করে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, হরতাল-অবরোধ কিংবা জ্বালাও-পোড়াওয়ের সময়ও আমরা ক্লাস নিয়ে সেশনজট হ্রাস করেছি। কিন্তু কর্মবিরতির ফলে সেশনজটের দায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নেবে না। দেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে আন্দোলন চলছে। আন্দোলনের মধ্যে নতুন কোনো পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হবে না।
শিক্ষকদের দাবির মধ্যে রয়েছে- অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলে সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বহালসহ অন্য সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত রাখতে হবে, নতুন বেতন স্কেলে সিনিয়র সচিবের যে স্থান রাখা হয়েছে, সেই স্থানে গ্রেড-১ প্রাপ্ত অধ্যাপকদের মধ্য থেকে একটি অংশকে শতকরা হারে উন্নীত করার বিধান রাখতে হবে এবং সরকারি কর্মকর্তাদের মতো গাড়ি ও অন্যান্য সুবিধা দিতে হবে।