শিক্ষা অর্জনের বা চাকরির প্রয়োজনে নারীরা আসেন তিলোত্তমা এই ঢাকা মহানগরীতে। এই নগরে যাদের আত্মীয়-স্বজন রয়েছে, তাদের থাকার কোনো সমস্যা নেই। তবে যাদের আত্মীয় স্বজন নেই তাদের জন্য বাসস্থান পাওয়া বেশ কাষ্টকর। রাজধানীতে ছাত্রী ও কর্মজীবী মহিলাদের বাসস্থান সঙ্কট নিরসনে লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি দেখা দিয়েছে সম্প্রতি। কারণ এই কষ্ট দূর করতে সরকারি, বেসরকারি এবং ব্যাক্তি মালিকানায় ঢাকা শহরের উত্তরা, ফার্মগেট, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, মগবাজার, সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় মানসম্পন্ন বেশ কিছু কর্মজীবী মহিলা ও ছাত্রী হোস্টেল গড়ে উঠেছে। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা, লেখাপড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ, উন্নত খাবার এবং মানসম্মত থাকার ব্যবস্থা রয়েছে এসব হোস্টেলে।
সিট প্রাপ্তির নিয়ম : সিট নিতে হলে এসব হোস্টেলের ফরম পূরণ করতে হয়। বাবা-মা ছাড়াও ঢাকাতে স্থানীয় অভিভাবকের নাম, ঠিকানা এবং ছবি জমা দিতে হয়। ভর্তি ফি বাবদ উত্তরাতে ২,৫০০ টাকা, মোহাম্মদপুরে ১,০০০ থেকে ১,২০০ টাকা, মগবাজার বা সিদ্ধেশ্বরীতে ২,৪০০ টাকা এবং ফার্মগেটে ১,৫০০ টাকা থেকে ১,৮০০ টাকা প্রদান করতে হয়। কম্পিউটার ব্যবহার করলে অতিরিক্ত ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা প্রত্যেক মাসে প্রদান করতে হয়। প্রত্যেক মাসের ৫ তারিখের মধ্যে মাসের থাকা-খাওয়ার ফি পরিশোধ করতে হয়।
প্রবেশ ও বাহিরের সময়সূচি : নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে হোস্টেল কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের ক্ষেত্রে ফেরার সময় রাত ৮টা এবং কর্মজীবী মহিলাদের ক্ষেত্রে রাত ১০টা নিধারণ করেন। তবে এক্ষেত্রে অভিভাবকের সম্মতি থাকতে হয়।
সাথে যা আনতে হয় : হোস্টেলগুলো থেকে থাকার খাট, চেয়ার-টেবিল, লকার সরবরাহ করা হয়। বোর্ডারদের তোষক, বালিশ, বিছনা চাঁদর, থালা-বাসন নিয়ে আসতে হয়।
টাকা ও গহনা রাখার ব্যবস্থা : বোর্ডারদের নিজরুম থেকে টাকা বা গহনা হারিয়ে গেলে কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকার দায়-দায়িত্ব নেয় না। তবে বোর্ডাররা ইচ্ছে করলে রিসিভ কপির মাধ্যমে টাকা বা গহনা হোস্টেল কর্তৃপক্ষের কাছে জমা রাখতে পারে। সে ক্ষেত্রে সব দায়-দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের।
বিবিধ : হোস্টেলে সিট ছাড়তে হলে অন্তত এক মাস আগে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। ইচ্ছা করলে অনেক হোস্টেলের বোর্ডাররা নিজেও রান্না করতে পারে। তবে এতে মাসিক ফির কোনো প্রকার কম করা হয় না।
কয়েকটি মহিলা হোস্টেল নাম ও লোকেশন
নীলক্ষেত কর্মজীবি মহিলা হোস্টেল : ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই হোস্টেলটি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিচালনা করছে। রাজধানীর নিউমার্কেটের পূর্ব পার্শে নীলক্ষেত এলাকায় এটি প্রতিষ্ঠিত। এই হোস্টেলেরই একটি শাখা রয়েছে রাজধানীর শাহজাহানপুরে।
শান্তি নিকেতন (ছাত্রী ও কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল) : রাজধানীর উত্তরায় ব্যাক্তি মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত এটি। (বাড়ি-৮, রোড-১৯, সেক্টর-৪, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০, ফোন: ০১৭৭৪-৪২৬৮৯৯)। আট কাঠা জমির ওপর ছয়তলা বিশাল ভবন নিয়ে এই হোস্টেল ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
হ্যাপি হোম মহিলা হোস্টেল : ছাত্রী ও কর্মজীবি মহিলাদের এই হোস্টেলটি মিরপুর ১ নম্বরে অবস্থিত। এটি একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন হোস্টোল।
মহিলা স্বর্গ ছাত্রী নিবাস : আজিমপুর এলাকায় ছাত্রীদের থাকা-খাওয়ার জন্য যে কয়টি হোস্টেল গড়ে উঠেছে তার মধ্যে এ ছাত্রী নিবাস একটি।
শেলটেক জয় ছাত্রী হোস্টেল : বনানীতে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত ছাত্রীদের থাকার সমস্যা সমাধানে এটি অন্যতম।
এছাড়া আরো আছে- নিরাপদ ছাত্রী হোস্টেল, সিদ্দিকীয়া ছাত্রী নিবাস, স্বপ্ননীড় ছাত্রী হোস্টেল।