দলে বড় পরিবর্তন আনা হবে: নাজমুল হাসান পাপনের

0

nazmul_hassan_papon_33858বাংলাদেশ দল খারাপ খেললে পুরো দেশেরই মন খারাপ হয়। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানই আর বাদ যাবেন কেন! তাঁরও মন খারাপ। এশিয়া কাপে আফগানিস্তান আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হংকংয়ের কাছে হার, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গত ম্যাচের ব্যাটিং ব্যর্থতা—এসবের কোনোটারই কোনো ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছেন না বিসিবির সভাপতি।

‘গতকালের (পরশু) ম্যাচটা আমরা হারতে পারি, কিন্তু এভাবে হারার কোনো মানে খুঁজে পাই না’—ক্ষুব্ধ কণ্ঠেই বলছিলেন নাজমুল হাসান। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এসেছিলেন জাতীয় সংগীত গাইতে। এই পর্বের পর খেলোয়াড়দের সঙ্গে আলাপ শেষে নিজের কক্ষে কথা বলেছেন সাংবাদিকদের সঙ্গেও। বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্স, কোচ-অধিনায়কের ভূমিকা, খেলোয়াড়দের শৃঙ্খলা সব বিষয়েই নিজের মতামত জানিয়েছেন সভাপতি। ইঙ্গিত পরিষ্কার, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলাকালে খুব বেশি না হলেও বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশের ক্রিকেটে বড় ধরনের ওলট-পালট হতে যাচ্ছে।

নাজমুল সরাসরিই বললেন, ‘এই টুর্নামেন্টের পর আমার ধারণা অনেক পরিবর্তন আসবে। যেখানে যেটা করা দরকার আমরা করব। নতুন নতুন খেলোয়াড় আনার ব্যবস্থা করতে হবে। এখন এটা বলে কারও মন খারাপ করতে চাই না। টুর্নামেন্ট চলছে, আশা করি প্রত্যেক খেলোয়াড় তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী ভালো খেলবে।’

তবে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের ওপর সভাপতি এখনো আস্থাশীল, ‘আগের সিরিজগুলোর সময় আমরা মনে করেছি, সে পুরোপুরি নির্ভর করার মতো। আমার এ ব্যাপারে এখনো কোনো সন্দেহ নেই। খেলোয়াড়দের সঙ্গে আমরা এসব নিয়ে কথা বলি না। এটা আসলে অপারেশন্সে যারা আছে তাদের ব্যাপার।’ বোর্ড সভাপতি কোচ শেন জার্গেনসেনকে নিয়েও ইঙ্গিত দিয়েছেন, ‘মেসেজ যার যা পাওয়া দরকার, ইতিমধ্যেই পেয়ে গেছে আমার কাছ থেকে।’ কোচ জার্গেনসেনের খেলোয়াড়দের ওপর কতটুকু নিয়ন্ত্রণ তা নিয়েই যে প্রশ্ন আছে সভাপতির, ‘আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম তোমাদের গেম প্ল্যান কী? ও বলেছিল এটা। আমি বললাম, এটা তো হয়নি। ও বলে, বলেছিলাম, কিন্তু ওরা তা করতে পারেনি। করতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কী…?’ দলীয় পরিকল্পনা কাজে লাগাতে ব্যর্থ ক্রিকেটারদের ব্যাপারে ভবিষ্যতে কঠোর হবেন নাজমুল, ‘দল এমনিও হারে, ওমনিও হারে, কিন্তু শৃঙ্খলা মানতে হবে। কেউ পরিকল্পনা না মানলে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দরকার হলে ড্রপ করতে হবে। বলে দিতে হবে, কথা শোনোনি বলে তোমাকে ড্রপ করা হলো। এতে সাময়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ভবিষ্যতে লাভবান হব বলেই মনে করি।’ তবে এখন পর্যন্ত কারও বাদ পড়াই শাস্তি নয় বলে জানিয়েছেন। পরিবর্তন যাই হয়েছে, দলীয় সমন্বয়ের জন্য।

মুশফিকুর রহিম একটা কথা আগেও বলেছিলেন, পরশু ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারের পরও বললেন—গত দুই বছর বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা চাপমুক্ত থেকে খেললেও এখন সেটা হচ্ছে না। অনেকে নাকি দলে জায়গা ধরে রাখা নিয়েই উদ্বিগ্ন। প্রসঙ্গটা তুললে বোর্ড সভাপতি অবাকই হলেন একটু, ‘ওপেনিংয়ে কেউ খারাপ করলে আমাকে তো তিনজনের মধ্য থেকেই কাউকে না কাউকে নিতেই  হবে। এখানে তারা কী অনিশ্চয়তা দেখছে, বুঝি না। মিডল অর্ডারে সাকিব-মুশফিককে নিয়ে কারও কোনো কথা নেই। পেস বোলাদের নিয়েও কথা নেই। কথা আসতে পারে শুধু রিয়াদ (মাহমুদউল্লাহ) এবং নাসিরকে নিয়ে। খারাপ সময় যেতেই পারে একজনের। তাই বলে অন্যদের সুযোগ না দিলে তাদের দলে রেখে লাভ কী?’

টেস্ট-ওয়ানডের তুলনায় এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিটাই বেশি কঠিন মনে হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারের জন্য। ভবিষ্যতে তাই টি-টোয়েন্টির জন্য আলাদা কোচ আনা যায় কি না, সেই ভাবনাটাও কাজ করছে সভাপতির মাথায়। প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করছেন ভালো একজন ফিল্ডিং কোচেরও।

দেশের মাঠের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আশা ভরে অপেক্ষা করছিল সবাই। কিন্তু সময় যতই গড়াচ্ছে, বিশ্বকাপ যেন হয়ে উঠছে ‘বিভীষিকা কাপ’। বাকি তিন ম্যাচে খেলোয়াড়েরা পরিস্থিতি বদলাতে পারলে ভালো, নয়তো বিশ্বকাপের পর অনেক কিছুতেই বদল আসবে নিশ্চিত।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More