ক্যানসার প্রতিরোধে কার্যকর ৭ মসলা

0
হলুদ, মৌরি, আদা, জিরা, দারুচিনি, জাফরান, গোলমরিচসহ ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন মসলায় আছে ক্যানসার প্রতিরোধক প্রয়োজনীয় নানা পুষ্টি উপাদান। ছবিটি প্রতীকী।
হলুদ, মৌরি, আদা, জিরা, দারুচিনি, জাফরান, গোলমরিচসহ ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন মসলায় আছে ক্যানসার প্রতিরোধক প্রয়োজনীয় নানা পুষ্টি উপাদান। ছবিটি প্রতীকী।

প্রতিপক্ষ যদি হয় ক্যানসারের মতো কোনো মরণব্যাধি, তাহলে লড়াইয়ে প্রস্তুত থাকা দরকার সারা জীবন ধরেই। জীবনযাপনের ধরন নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং খাবারদাবারে সচেতনতা এজন্য খুবই জরুরি। নিত্যদিন খাচ্ছি, এমন অনেক খাদ্যেও আছে ক্যানসার প্রতিরোধের গুরুত্বপূর্ণ অনেক উপাদান। এগুলো জেনে নিলে পরিবারের সবাইকে নিয়ে নিয়ম করে সেসব খেয়ে নিজেদের প্রস্তুত রাখা যেতে পারে ক্যানসার প্রতিরোধে।

সিনিয়র সার্জিক্যাল অনকোলজিস্ট নিরঞ্জন নাইক এবং সিনিয়র ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট শিপ্রা সাকলানির সঙ্গে কথা বলে ঐতিহ্যবাহী কিছু ভারতীয় মসলার ক্যানসার প্রতিরোধে কার্যকর গুণাগুণ তুলে ধরেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।

হলুদ
এমনিতে প্রচলিত যে, মসলা হিসেবে হলুদের নাকি কোনো গুণই নেই, শুধু রান্নার সময় খাবারে রং আনার জন্যই অনেকে হলুদ ব্যবহার করেন। কিন্তু ক্যানসার ঠেকানোর বিষয় নিয়ে কথা হলে মসলার রাজা হলুদ। এতে আছে শক্তিশালী পলিফেনোল কারকিউমিন। প্রোস্টেট ক্যানসার, মেলানোমা, স্তন ক্যানসার, ব্রেইন টিউমার ও প্যানক্রিয়েটিক ক্যানসারের ক্ষেত্রে ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি ঠেকাতে খুবই উপকারী এই পলিফেনোল কারকিউমিন। অন্যান্য রোগের মধ্যে লিউকোমিয়ার বিস্তার ঠেকাতে সহায়তা করে এটা।

মৌরি

ক্যানসার কোষকে পরাস্ত করতে খুবই কার্যকর মৌরির সাইটো-নিউট্রিয়েন্ট এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি ঠেকানোর ক্ষেত্রে মৌরির একটা অন্যতম প্রধান উপাদান অ্যানাথোল গুরুত্বপূর্ণ। ক্যানসার কোষের বহুগুণে বেড়ে যাওয়া আটকে দিতে এনজাইমের কর্মকাণ্ডকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে মৌরির এই উপাদান। টমেটো দিয়ে মৌরির স্যুপ খুবই সুস্বাদু। এই স্যুপের সঙ্গে খেতে পারেন আদা কুচি ও তাজা সালাদও।

জাফরান

জাফরানে আছে ক্যানসার প্রতিরোধের প্রাথমিক একটা উপাদান ক্রোসেটিন। এটা শুধু ক্যানসারের বিস্তারই ঠেকাতেই সাহায্য করে না, উপরন্তু টিউমারকে নিয়ন্ত্রণ করে তার আকৃতি ছোটো করে ফেলতেও সহায়তা করতে পারে এই ক্রোসেটিন। বিশ্বের সবচেয়ে দামি মসলা এটা। মাত্র ৫০০ গ্রাম জাফরানের জন্য প্রয়োজন হয় প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার ফুলের গর্ভমুণ্ড।

 

জিরা

জিরা পরিপাকে সাহায্য করে বলেই হয়তো খাওয়াদাওয়ার পর আমরা একটু জিরার দানা চিবিয়ে নিই। এটা খুবই স্বাস্থ্যকর একটা মসলা। প্রোস্টেট ক্যানসারের কোষগুলোর বিস্তার ঠেকাতে সহায়তা করতে পারে জিরায় থাকা থাইমোকুইনোন। তাই শুধু খাবারদাবারের স্বাদ বাড়াতেই নয়, স্বাস্থ্যগত কারণেও নিয়মিত জিরা খান।

দারুচিনি

ক্যানসারের ঝুঁকি দূরে সরিয়ে রাখতে প্রতিদিন আধা চা-চামচ দারুচিনির গুঁড়া খেতে পারেন। খাবার অবিকৃত রাখার প্রাকৃতিক উপাদান দারুচিনি আয়রন ও ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ। টিউমারের বৃদ্ধি ঠেকাতে সহায়তা করতে পারে দারুচিনি। রান্নাবান্নায় দারুচিনির ব্যবহার আমরা তো কম-বেশি সবাই করি। পাশাপাশি সকালের নাশতায় যোগ করতে পারেন দারুচিনির চা। আর রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে দুধের সঙ্গে একটু দারুচিনি ও মধু যোগ করে নিতে পারেন।

গোলমরিচ

গোলমরিচ খেতে হবে খুবই সাবধানে। কেননা পরিমাণে অতিরিক্ত হয়ে গেলে এর তীব্র ঝালে মুশকিলে পড়ে যেতে পারেন আপনি। তবে এই মসলায় আছে ক্যানসার প্রতিরোধের এমন এক উপাদান, যা ক্যানসার কোষের সম্ভাব্য বিস্তার রোধ করতে এবং লিউকেমিয়া টিউমার কোষের বিস্তার রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম।

আদা

দারুণ এই মসলার আছে অনেকগুলো ভেষজ গুণ। আদা কোলেস্টরেল কমানো, পরিপাকের প্রক্রিয়া ভালো রাখা এবং ক্যানসার কোষ দমনে সক্ষম। সবজি এবং মাছ-মাংসের তরকারির মতোই সালাদেও খেতে পারেন আদার কুচি। রান্নায় স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি এর গুণাগুণের জন্যই নিয়মিত আদা খেতে পারেন।

ঐতিহ্যবাহী এসব ভারতীয় মসলার পাশাপাশি লবঙ্গ, তুলসী, রসুন, কেওড়া, মেথি, সরিষা, পুদিনাপাতায়ও ক্যানসার প্রতিরোধক প্রয়োজনীয় নানা পুষ্টি উপাদান আছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More