নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা লোডশেডিং যন্ত্রণায় আছে

0

image_37139_0ঝড়, বৃষ্টি কিংবা বজ্রপাত নয়, সামান্য বাতাসেই বিদ্যুৎ হাওয়া। দিনের বেলায় দুই ঘণ্টাও থাকে না বিদ্যুৎ।

প্রচণ্ড গরমের মধ্যে বিদ্যুতের এমন ভেল্কিবাজিতে হাঁসফাঁস অবস্থায় আছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। নরক যন্ত্রণায় বিপর্যস্ত শিক্ষার্থীরা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাবিতে শুক্রবার প্রথমবারের মতো রাস্তায় নামে, মহাসড়ক অবরোধ করে। 

শিক্ষার্থীরা আরো জানায়, অসহনীয় গরমের মধ্যে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত শিক্ষার্থীরা শুক্রবার রাতে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছেড়ে ত্রিশাল উপজেলা সদরে আসে। পরে প্রায় আধা ঘণ্টার মতো তারা ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিদ্যুতের স্থানীয় সাব স্টেশন অফিসের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করে। দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস পেয়ে পরে তারা ক্যাম্পাসে ফিরে যায়। 

তারা জানায়, তীব্র দাবদাহের মধ্যেও রাতে পাওয়া যায় মাত্র দুই থেকে তিন ঘণ্টা। এ সময়টায় মোমের আলোতেই অসহ্য যন্ত্রণায় সারতে হয় পড়াশুনা। দিন-রাতের বেশিরভাগ সময়েই বিদ্যুৎ শুধু যায় আর আসে। 

জানা গেছে, দুখু মিয়ার দুরন্ত স্কুলবেলার জলছবি এঁকে দেওয়া নামাপাড়া বটতলা এলাকায় প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম এ সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ১২টি বিভাগে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার। এর মধ্যে মাত্র ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি হলে থাকে। বাকি শিক্ষার্থীরা ত্রিশালের বিভিন্ন মেসে ভাড়া থাকে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি জেনারেটর থাকলেও মেসে থাকা শিক্ষার্থীরা এ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত। ফলে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী দুঃসহ তাপদাহের মধ্যে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অসহনীয় দিন কাটাচ্ছে। বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার এ ভেল্কিবাজিতে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা শিঁকেয় উঠেছে। 

দাবদাহের মধ্যে বিদ্যুৎ না থাকাটা চরম মাত্রায় যন্ত্রণাদায়ক বলেন- নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মাস্টার্স ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়া শিক্ষার্থী মাহমুদুল্লাহ খান রতন। 

তার ভাষ্য মতে, ত্রিশালের একটি প্রচলিত কথা-এখানে কখনো বিদ্যুৎ যায় না। মাঝে মাঝে আসে। ফলে প্রতিদিনই মোমের আলোয় আমাদের পড়াশুনা করতে হয়। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী বাপ্পি ও চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী দীপঙ্কর জানান, সভ্যতার অপরিহার্য চালিকাশক্তি বিদ্যুৎ। কিন্তু এ বিদ্যুৎ না থাকায় প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গোসল ও খাওয়া-দাওয়া ব্যাহত হয়। 

ত্রিশাল বিদ্যুৎ অফিসের আবাসিক প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্র জানায়, সময়ের ব্যবধানে হু হু করে ত্রিশালে মৎস্য খামার, হ্যাচারি ও পোল্ট্রি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মিলের সংখ্যা বাড়ছে। ফলে বিদ্যুতের চাহিদাও বাড়ছে। কিন্তু চাহিদা মোতাবেক বিদ্যুতের সরবরাহ না থাকায় দুইটি ফিডার এক সঙ্গে চালানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে দফায় দফায় লোডশেডিং হচ্ছে। 

এ ব্যাপারে ত্রিশাল বিদ্যুৎ অফিসের আবাসিক প্রকৌশলী মো. সালাহউদ্দিন জানান, ত্রিশালে প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা ৮ মেগাওয়াট। সেখানে আমরা পাচ্ছি মাত্র ২ থেকে ৩ মেগাওয়াট। ফলে অনিচ্ছা সত্ত্বেও লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। 

তিনি জানান, কেওয়াটখালী ৩৩/১১ কেভি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের কাজ শেষ হলে এ সমস্যার সমাধান হবে। তবে কবে নাগাদ এ সমস্যার সমাধান মিলবে এ প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More