ছোট ভাইকে দলের কো-চেয়ারম্যান করলেন এরশাদ

0

jiamজাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তাঁর ছোট ভাই ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরকে দলের কো-চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেছেন। গতকাল রোববার রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন তিনি। এরশাদ বলেন, তাঁর অবর্তমানে দলের হাল ধরবেন জি এম কাদের।
এরশাদের এই সিদ্ধান্তে দলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। পানিসম্পদ মন্ত্রী ও জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিনি এটা করতে পারেন না। এটা করার আগে প্রেসিডিয়ামের বৈঠক দিতে হবে। প্রেসিডিয়ামের মিটিং ছাড়া এটা করা হয়েছে। গঠনতন্ত্রেও নেই। সুতরাং এটার গ্রহণযোগ্যতা পার্টির মধ্যে নেই।’
এরশাদও গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দলে কো-চেয়ারম্যানের কোনো পদ নেই। তবে আগামী এপ্রিলে দলের যে ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হবে সেখানে কো-চেয়ারম্যান পদ সৃষ্টি করে তা অনুমোদন করে নেওয়া হবে। এই সম্মেলন অনুষ্ঠানের জন্য একটি প্রস্তুতি কমিটিও ঘোষণা করেন এরশাদ। এতে জি এম কাদেরকে আহ্বায়ক ও রুহুল আমিন হাওলাদারকে সদস্যসচিব করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ বলেন, জাতীয় পার্টি এখন চরম সংকটের মুখে পড়েছে। জাতীয় পার্টি আছে কি নেই সেটা দেশের মানুষ জানে না। দেশের মানুষ লাঙ্গলের নাম ভুলতে বসেছে। দলকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থেই গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে দলের কো-চেয়ারম্যান করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় ছিল না।
দলের সংকটের কারণ সম্পর্কে এরশাদ বলেন, ‘আমার দলের তিন সাংসদ মন্ত্রী হয়েছেন। আমি নিজেই প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আমরা বিরোধী দলে আছি না সরকারি দলে আছি, সেটা দেশের মানুষ বুঝতে পারছে না।’
সংবাদ সম্মেলনে জি এম কাদের, সৈয়দ নুর আহমেদ, মোফাজ্জল হোসেন, মকবুল শাহরিয়ার আসিফ, মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা উপস্থিত ছিলেন।
এরশাদের গতকালের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জাপা নেতারা বলছেন, রওশন এরশাদকে চাপে রাখা, দলের মধ্যে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করা, সরকার থেকে বেরিয়ে আসাসহ নানা কৌশল থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জাপার এরশাদপন্থী নেতাদের মতে, এরশাদ দীর্ঘদিন থেকেই সরকারের বাইরে আসার নানা উপায় খুঁজছেন। তারপরও দলে রওশনপন্থী নেতাদের আধিক্যের কারণে সেভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না। তাই ছোট ভাইকে দলের কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিয়েছেন, তাও ঢাকায় নয়, রংপুরে বসে। এ বিষয়ে জি এম কাদের প্রথম আলোকে বলেন, ‘চেয়ারম্যান তাঁর নির্বাহী ক্ষমতাবলে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পরবর্তী জাতীয় সম্মেলনে কাউন্সিল সদস্যদের মতামত নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যেই কাউন্সিল হওয়ার কথা রয়েছে।’
আর দলের মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানি না। আপনার কাছ থেকেই প্রথম শুনলাম। চেয়ারম্যান সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাঁকেই জিজ্ঞাসা করেন।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More