অবশেষে বেড়েছে শীতের তীব্রতা

0

winnterবঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে সারাদেশে হাড় কাঁপানো শীত জেঁকে বসেছে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মৃদু শৈত্যপ্রবাহে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে সারাদিন রোদের দেখা মেলেনি বললেই চলে। দুপুরে সামান্য রোদ্দুর দেখা দিলেও তাতে কোনো উত্তাপ ছিল না। ফলে বেড়ে যায় শীতের তীব্রতা। এর প্রভাবে রাজধানী ঢাকায়ও অনুভূত হয় শীতের তীব্রতা।
এই ঠাণ্ডায় নি¤œআয়ের মানুষের জবুথবু অবস্থা। একদিকে গরম কাপড়ের অভাব, অন্যদিকে কাজে বের হতে না পারায় আয়-রুজির সংকটে তাদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তাও পাচ্ছেন না তারা। কোনো কোনো স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে শীতজনিত রোগবালাই। শীত এলেই সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় রাজধানীর ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষের।
রাজধানীতে হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া শীতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ছিন্নমূল ও শ্রমজীবী মানুষ। কমলাপুর, খিলগাঁও, আজিমপুর ও কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, তীব্র ঠাণ্ডায় ফুটপাতেই আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। কেউবা  আবার পাতলা চাদর জড়িয়ে রাস্তার কোনায় শুয়ে পার করছেন রাত। ছিন্নমূল মানুষের কষ্টের এই চিত্র এবারের নয়, প্রতি শীত মৌসুমের। এরপরও বিত্তবানদের কাউকে পাশে পাচ্ছেন না বলে অভিমানী সুর এসব অসহায় মানুষের। এক শ্রমজীবী বলেন, ‘এই শীতের মধ্যে কাজ করতে অনেক কষ্ট। তবুও কাজ তো করতেই হবে। আমরা গরিব, কাজ করেই আমাদের বাঁচতে হয়।’ সমাজের সামর্থ্যবানদের সদিচ্ছাই পারে এই তীব্র শীতে সুবিধাবঞ্চিত ছিন্নমূল মানুষগুলোকে উষ্ণতা দিতে। রাজধানীবাসী ছিন্নমূল অপর এক নারী বলেন, ‘এমন ঠাণ্ডায় মানুষ বাঁচে না। রাতে আমরা ঘুমাতে পারি না। আমাদের কাঁথা-কাপড় কিছুই নেই।’ শুধু শুয়ে বসে থাকা নয়, প্রচণ্ড শীত সহ্য করেই নি¤œআয়ের মানুষের বড় একটি অংশ রাত পার করছেন এই রাজধানীতে। কেউ রিকশা চালিয়ে, কেউবা মাথায় পণ্য-বোঝাই করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। পেটের দায় শীতের কামড়ের চেয়েও আরো কষ্টের- এমনই জবাব তাদের মুখে।
উত্তরাঞ্চলে হিমেল হাওয়া, বিপর্যস্ত জনপদ: বগুড়া ব্যুরো জানায়, বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলজুড়ে বইছে হিমেল হাওয়া। কুয়াশার সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবন। বৃহস্পতিবার থেকে দেখা মিলছে না সূর্যের। এদিকে শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে সবখানে।
বগুড়া আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মাহমুদুল হাসান জানান, শুক্রবার বিকেল ৩টায় বগুড়ায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় সর্বনি¤œ ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বোচ্চ ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৮৭ শতাংশ। তিনি বলেন, শনিবার (আজ) থেকে শীতের তীব্রতা আরো বাড়তে পারে এবং তা এক সপ্তাহ পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
এদিকে তীব্র শীতে মানুষ জড়োসড়ো হয়ে পড়েছে। এতে নি¤œ শ্রেণীর লোকজনের কষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে যারা ফুটপাত এবং গৃহহারা তারা তীব্র শীতে কাবু হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুরা সর্দি, শ্বাসকষ্ট, আমাশয়সহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
এদিকে চলমান ঠাণ্ডা বাতাসের সঙ্গে হাড় কাঁপানো শীতের কারণে শীতবস্ত্রের দোকানে ভিড় জমেছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More