ইভিএম মেরামতেই লাগবে হাজার কোটি টাকার বেশি

ব্যবহার অযোগ্য ৪০ হাজার

0

নির্বাচন কমিশনের হাতে থাকা দেড় লাখ ইলেকট্র্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মধ্যে ৪০ হাজারই ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বাকি ১ লাখ ১০ হাজার ইভিএম মেরামত করতে হবে; এ জন্য নির্বাচন কমিশনের ১ হাজার ২৫৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা লাগবে। তবে এ টাকা বরাদ্দ পাওয়া নিয়ে সংশয়ে রয়েছে নির্বাচন কমিশন। আজ অর্থ মন্ত্রণালয়ে টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব দেবে ইসি সচিবালয়।

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার ইভিএম সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ) এর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের বৈঠক হয়। বৈঠকে ইভিএম মেরামত ও মেইনটেন্যান্স নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনায় দেড় লাখ ইভিএমের মধ্যে ৪০ হাজার অকেজো হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া বাকি ১ লাখ ১০ হাজার ইভিএম মেরামতের জন্য প্রায় ১ হাজার ২৫৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা প্রয়োজন হতে পারে বলে জানিয়েছে বিএমটিএফ।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, প্রতিটি ইভিএমের ব্যাটারি ও ঘড়ি পরিবর্তন করতে হবে। অনেক ইভিএমের কন্ট্রোল ইউনিট মেরামত, অনেক ইভিএমের ব্যালট ইউনিট, আবার অনেক ইভিএমের ডিসপ্লে ইউনিট মেরামতের প্রয়োজন হবে। এ ছাড়া অনেকগুলোর ক্যাবল (তার) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কিছু মনিটর নষ্ট হয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে ইভিএমে আঙুলের ছাপ নেওয়ার যে স্ক্যানার (ইভিএমে যুক্ত এক ধরনের যন্ত্রাংশ) সেটা ভালোভাবে কাজ করছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাটন নষ্ট হয়েছে। ইসির কর্মকর্তারা জানান, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের (২০১৮ সালে) আগে ইভিএম কেনার জন্য ৩ হাজার ৮২৫ কোটি টাকার পাঁচ বছর মেয়াদি একটি প্রকল্প নেয় নির্বাচন কমিশন। ওই প্রকল্পের অধীনে ১ লাখ ৫০ হাজার ইভিএম কেনা হয়। দেড় লাখ ইভিএম কিনতে ওই প্রকল্পে ৩ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়, যা মোট প্রকল্পে ব্যয়ের ৯২ শতাংশ ছিল। ইভিএম মেরামতের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিএমটিএফের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। ইভিএম মেরামতের জন্য প্রায় ১২৬০ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে বলে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে; তবে সেটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এ টাকা আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে চাইব। আজ সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বর্তমান প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ৫০ হাজার ইভিএম সংগ্রহ করা হয়। ২০১৮ সাল থেকে এসব ইভিএম দ্বারা অদ্যাবধি ১১৪৩টি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি ইভিএম গত ৫ বছরে  গড়ে ৩ থেকে চারবার সব প্রকার নির্বাচনে ব্যবহার হয়। এ ছাড়া আগামী জুন মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে। যেহেতু প্রতিটি ইভিএম বিভিন্ন নির্বাচনে একাধিকবার ব্যবহার হয়েছে এবং এর ওয়ারেন্টি ও সার্ভিস সাপোর্টের মেয়াদও জুন মাসে শেষ হবে, ফলে জাতীয় নির্বাচনে এসব ইভিএম ব্যবহারের জন্য নির্বাচনের আগে প্রতিটি ইভিএমের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি ও আবশ্যক। এ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিএমটিএফের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। একমাত্র উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে তারা সব ইভিএমের রিফারবিশমেন্টের প্রয়োজনীয়তার কথা বলে। কমিশন তাদের প্রস্তাব বিবেচনা করছে। আর্থিক সংগতি সাপেক্ষে কমিশন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

BdProtidin

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More