২৬ ডিসেম্বর সেনা মোতায়েন

0

shenaঢাকা: দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে ২৬ ডিসেম্বর থেকে আগামী ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সারাদেশে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।. আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক শেষে শুক্রবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ।

সে অনুযায়ী এবারের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১৫ দিন সেনাবাহিনী মাঠে থাকবে। যে ১৪৬ আসনে ভোট অনুষ্ঠিত হবে সে আসনেই সেনা সদস্যরা মোতায়েন হবে। এদিকে বিগত নির্বাচনগুলোর মধ্যে ২০০৮ সালের নির্বাচনে ভোটগ্রহণের আগে ও পরে মোট ১২ দিন সেনা মোতায়েন ছিল। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে সেনা ছিল ২০ দিন।

তবে ৯ জানুয়ারির পরেও সেনা সদস্যরা মাঠে থাকবে কি না এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলেননি সিইসি। তিনি বলেন, ‘এখনই এমন প্রয়োজন বোধ করছি না। তবে প্রয়োজন দেখা দিলে ঝুঁকিপূর্ণ প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে আরও বেশি সময় থাকতে পারে।’

কত সংখ্যক সেনা সদস্য মাঠে থাকবে সে সংখ্যাও উল্লেখ করেননি সিইসি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অষ্টম সংসদ নির্বাচনে যে পরিমাণ মোতায়েন হয়েছিল, এবারও সে সংখ্যক বা তার চাইতে বেশি মোতায়েন হবে। গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে এ সংখ্যাটি তারাই নির্ণয় করবে।’

প্রত্যেক জেলায় সেনাদের ঘাঁটি থাকবে বলেও জানান কাজী রকিব। সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেটও থাকবে বলে সাংবাদিকদের বলেন তিনি।

‘আচরণবিধি লঙ্ঘন বরদাশত করা হবে না’ উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘আচরণবিধির বরখেলাপ কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। কেউ এর ব্যত্যয় করলেই তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেয়া হবে। সবাইকে এ বিষয়ে শক্তভাবে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছেন কাজী রকিব। তিনি বলেন, ‘অবৈধ অস্ত্র কারও রাখার কথা নয়। এগুলো উদ্ধার করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ কার্যক্রম শুরু করেছেন। এ কাজ আরও জোরদার করা হবে। পরিস্থিতি আরও উন্নত হবে, যাতে করে ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে এসে আবার বাসায় ফিরে যেতে পারে।’

সারাদেশের কী পরিমাণ ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র রয়েছে, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র এখনও ফাইনাল করিনি। আরও দিন গেলে সঠিক সংখ্যা পাবো।’

বিদেশি পর্যবেক্ষকদের প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, ‘তাদের আসা না আসার উপর আমাদের কোনো জোর নেই। পর্যবেক্ষণ করা যার যার বিষয়। আমি মনে করি, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি হলে অনেকেই পর্যবেক্ষণ করতে আসবেন।’

সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, ‘সারাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার আমাদেরকে অবহিত করেছেন। তারা বলেছেন, পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। তারা এনসিওর করেছেন, এ পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে।’ সন্ত্রাসীদের কোনো রাজনৈতিক দল থাকে না। তারা টাকার বিনিময়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে বলেও জানান তিনি।

বৈঠকে চার কমিশনার আব্দুল মোবারক, আবু হাফিজ, ব্রি. জে. (অব.) জাবেদ আলী ও মো. শাহনেওয়াজ ছাড়াও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুস সোবহান, স্বরাষ্ট্র সচিব সিকিউকে মোশতাক আহমেদ, সেনাবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) আবু বেলাল মো. শফিউল হক, পুলিশ মহাপরিদর্শক খন্দকার হাসান মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ২৫ নভেম্বর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। সে অনুযায়ী আগামী ৫ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তবে এর আগে ১৫৪ আসনে বিনা প্রতিন্দ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়ে যাওয়ায় এখন বাকি ১৪৬ আসনে ভোটগ্রহণ হবে। এরমধ্যে পাঁচটি জেলার কোনো আসনের প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিন্দ্বন্দ্বি না থাকায় সে জেলাগুলোতেও কোনো ভোটগ্রহণের সুযোগ নেই।

এবারের নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা ৯ কোটি ১৯ লাখ ৬৫ হাজার ৯৭৭ জন। তবে এর মধ্যে ভোট দিতে পারবে কেবল ৪ কোটি ৩৬ লাখ ৮৫ হাজার ৬৭০ জন। এদের বিপরীতে ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১৮ হাজার ১২৩টি ও ভোট কক্ষ রয়েছে ৯০ হাজার ৭২৪টি।

এছাড়াও এ নির্বাচনে ১৮ হাজার ১২৩ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৯০ হাজার ৭২৪ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ১ লাখ ৮১ হাজার ৪৪৮ জন পোলিং অফিসার নিয়োজিত থাকবেন।

যাচাই বাছাই, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর ও ১৫৪ জন বিনা প্রতিন্দ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত প্রার্থী ছাড়া এ নির্বাচনে প্রতিন্দ্বন্দ্বি প্রার্থীর সংখ্যা ৩৮৬ জন।

এইচ এন

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More