ইমেরিটরস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, গণতন্ত্রের উন্নয়ন তো দেখা যাচ্ছে না। আমরা তো বলতে পারব না এখানে সংসদীয় গণতন্ত্র ঠিকমতো কাজ করছে না। কেননা নির্বাচনগুলো তো সেভাবে গ্রহণযোগ্য ও সবার অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না। আবার দেশের ইতিহাসে একাধিকবার সামরিক শাসন হয়েছে। নির্বাচিত স্বৈরাচাররা দেশ পরিচালনা করেছে।
মঙ্গলবার আলাপকালে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়েছে পঞ্চাশ বছরের বেশি। কিন্তু মানবিক মূল্যবোধের বিকাশ তো দূরের কথা তা ক্রমাগত নামছেই। ব্যবসায়ীরা মুনাফাতে পারদর্শী। আমলাতন্ত্র ঘুস, দুর্নীতি তৈরি করেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মূল উদ্দেশ্য ক্ষমতায় যাওয়া। গণতন্ত্র বা মূল্যবোধের বিকাশ নিয়ে তারা ভাবছে না। এ নিয়ে কোনো কার্যকর উদ্যোগও নেই। তাছাড়া সাধারণ মানুষের মধ্যেও নৈতিকতার অবক্ষয় ঘটেছে। অনেকে ভুয়া সার্টিফিকেট তৈরি করছে, খাদ্যে ভেজাল দিচ্ছে।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও মানবিক মূল্যবোধের উন্নয়নে প্রধান কাজ হচ্ছে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। সংসদীয় গণতন্ত্রে জবাবদিহিতা থাকতে হবে। প্রয়োজনে ব্যাখ্যা করতে হবে। কোনো বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইলে তা দিতে হবে। একই সঙ্গে স্বচ্ছতার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। গোপনে বা ঘুসের মাধ্যমে কিছু করা যাবে না। যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় আছেন তাদের প্রধান দায়িত্ব এটা নিশ্চিত করা।
এ প্রসঙ্গে জনগণের কোনো দায়বদ্ধতা রয়েছে কিনা-জানতে চাইলে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, জনগণ তো অতীতে করেছে, গণঅভ্যুত্থান করেছে। কিন্তু এখন তো স্বাধীন রাষ্ট্র। জনগণের জন্য তো রাজনৈতিক দল দরকার। জনগণের পক্ষের রাজনৈতিক দল নেই। যারা রাজনীতি করে, নিজেদের স্বার্থে। তারা ক্ষমতায় যায় নিজেদের জন্য। জনগণের উন্নতির দিকে বড় দু’দলের কোনো উদ্বেগ নেই।
এ শিক্ষাবিদের মতে, গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা বিকশিত না হওয়ার পেছনে পুঁজিবাদও দায়ী। সারা বিশ্বই এখন পুঁজিবাদদের দখলে। কিন্তু গণতন্ত্র পুঁজিবাদী বিশ্বে চলছে না। যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন হলে যারা পরাজিত হচ্ছে তারা মানছে না। স্পিকার নির্বাচনে ১৫ বার ভোট হয়েছে।
jugantor