ব্যাংকের প্রশ্নফাঁস: আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন বুয়েট অধ্যাপক

0

রাষ্ট্রায়ত্ত ৫ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে রাজধানীর বাড্ডা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. নিখিল রঞ্জন ধর। আজ রবিবার (৫ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহমেদের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি।

তার পক্ষে তুহিন হাওলাদার জামিন চেয়ে শুনানি করেন। শুনানিতে তারা বলেন, নিখিল রঞ্জন ধর প্রশ্নফাঁস করেননি। তার কাছ থেকে কেউ প্রশ্ন পায়নি বা নেয়নি। তিনি বয়স্ক মানুষ, জটিল রোগে আক্রান্ত। যেকোনো শর্তে তার জামিনের প্রার্থনা করছি। শুনানি শেষে আদালত দুই হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিন মঞ্জুর করেন। পরে আদালতের বাড্ডা থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক রণপ কুমার বিষয়টি জানিয়েছেন।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন আদালত। ড. নিখিল রঞ্জন ধর পলাতক থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। তারও আগে গত ৩১ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তেজগাঁও জোনাল টিমের সাব-ইন্সপেক্টর শামীম আহমেদ আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন- প্রশ্নফাঁসে জড়িত প্রধান আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি টেকনিশিয়ান মুক্তারুজ্জামান রয়েল, জনতা ব্যাংকের গুলশান শাখার কর্মকর্তা শামসুল হক শ্যামল, আব্দুল্লাহ আল জাবের, আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক দেলোয়ার হোসেন, রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জানে আলম মিলন, পূবালী ব্যাংকের ইমামগঞ্জ শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী রবিউল আউয়াল, পারভেজ মিয়া, মিজানুর রহমান মিজান,মোবিন উদ্দিন, সোহেল রানা, পরীক্ষার্থী রাইসুল ইসলাম স্বপন, রাশেদ আহম্মেদ বাবুল, জাহাঙ্গীর আলম জাহিদ ও রবিউল ইসলাম রবি।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ৫টি ব্যাংকে অফিসার (ক্যাশ) পদে এক হাজার ৫১১ জন জনকে নিয়োগ দিতে ২০২১ সালের ৬ নভেম্বর বিকেলে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন কেন্দ্রে এমসিকিউ পদ্ধতিতে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে প্রশ্নপত্র তৈরি ও পরীক্ষা সম্পাদনের দায়িত্বে ছিল আহছানউল্লা ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি। পরে পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হবে- ২০২১ সালের ৫ নভেম্বর রাতে এমন তথ্য আসে ডিবির কাছে।

ডিবির টিমের সদস্যরা ছদ্মবেশে পরীক্ষার্থী সেজে ৬ নভেম্বর সকাল সাতটার দিকে প্রশ্নপত্রসহ উত্তর পাওয়ার জন্য চক্রের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অগ্রিম টাকা পরিশোধের পর প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র ফাঁস চক্রের অন্যতম প্রধান রাইসুল ইসলাম স্বপন ডিবির ছদ্মবেশী পরীক্ষার্থীকে নিয়ে যান। এরপর পরীক্ষার উত্তরপত্রসহ স্বপনকে হাতেনাতে আটক করা হয়।

২০২১ সালের ৬ নভেম্বর পরীক্ষায় আসা প্রশ্নের সঙ্গে সকালে পাওয়া প্রশ্ন ও উত্তর হুবহু মিলে গেলে স্বপনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রূপালী ব্যাংকের সাভার শাখার শ্রীনগর থেকে জানে আলম মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়। রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জানে আলম মিলনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র সরবরাহকারী শামসুল হক শ্যামলকে ধরতে প্রথমে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অভিযান চালানো হয়। পরে জানা যায়, শ্যামল ঢাকায় অবস্থান করছেন। এরপর ঢাকার দক্ষিণ বাড্ডা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর ১০ নভেম্বর রাতে সোহেল, খোকন ও জাহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়।

উৎসঃ   দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস
Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More